Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ রবিবার, মে ২০২৪ | ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সেই জেলা প্রশাসকের তদন্ত কমিটিতে আস্থা নেই তিতাসের পরিবারের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ জুলাই ২০১৯, ১০:১২ PM
আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯, ১০:১২ PM

bdmorning Image Preview


মাদারীপুরের শিবচরে কাঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে এক ফেরিতে মুমূর্ষু রোগী স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে এ কমিটির তদন্তে আস্থাহীনতার কথা জানিয়েছেন স্কুলছাত্র তিতাসের পরিবার। এমনকি তদন্ত কমিটির রিপোর্ট তারা আগেই নাকচ করে দিয়েছেন।

আস্থাহীনতার কারণ হিসেবে তিতাসের পরিবার জানান, যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশেই ফেরিটি অপেক্ষমাণ ছিল, তার অধীনেই তদন্ত কোনো অবস্থাতেই নিরপেক্ষ হবে না।

আজ মঙ্গলবার সকাল থেকেই তদন্ত কমিটির প্রধান মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল হক পাটোয়ারীর নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। গত সোমবার গঠিত ওই কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, সার্কেল এএসপি আবির হোসেন ও বিআইডব্লিউটিসির এজিএম (মেরিন) একেএম শাজাহান।

পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কুমিল্লা ফেরির মাস্টার ইনচার্জ, কাঠালবাড়ি ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা ঘাট এলাকাও পরিদর্শন করেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে শিবচরের কাঠালবাড়ি ঘাটে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব আবদুস সবুরের জন্য কেটাইপ ফেরি কুমিল্লা ছাড়তে দেরি হয়। এ কারণে ফেরিতে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের রোগী স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষ ওই রাতেই মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় গত সোমবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডব্লিউটিসি আরও দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সোমবার দুপুরে বিআইডব্লিউটিসির দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি তাদের তদন্ত কাজে নৌরুট পরিদর্শনে করেন। এ ছাড়া নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যুগ্ম সচিব শাহনেওয়াজ দিলরুবা খান ও উপসচিব শাহ হাবিবুর রহমান হাকিমকে দিয়ে গঠিত দুই সদস্য বিশিষ্ট কমিটি বুধবার নৌরুটে তদন্তকাজে আসার কথা রয়েছে। কমিটিগুলোকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

আমির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি হয়েছে, এটি আশাব্যঞ্জক। তবে এ ঘটনায় যেহেতু জেলা প্রশাসকের নামটি বারবার আসছে, তাই তার অধীনস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত কমিটির তদন্ত নিয়ে সকলেরই সংশয় রয়েছে।’

স্কুলছাত্র তিতাসের মামা অশোক ঘোষ মুঠোফোনে বলেন, ‘জেলা প্রশাসক নিজেই এ ঘটনার জন্য মূল দায়ী। তার গঠিত কমিটি কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা ওই কমিটির তদন্তর আগেই তা নাকচ করছি। এটি মূল ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করবে।’

বিআইডব্লিউটিসি কাঁঠালবাড়ি ঘাট ম্যানেজার আ. সালাম বলেন, ‘জেলা প্রশাসক স্যার সেদিন তার কার্যালয়ে একটি সভায় যুগ্ম সচিব স্যারের কথা আমাকে জানিয়ে তার নম্বর দেন। যুগ্ম সচিবকে পারাপার করার জন্য ঘাটে কোনো ফেরি রাখা ছিল না। তাকে বহনকারী গাড়িটি ঘাটের কাছাকাছি চলে আসার ফোন পেয়ে কুমিল্লা ফেরিটি অ্যাম্বুলেন্সসহ সকল গাড়ি লোড দিয়ে সচিবের জন্য ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করেছিল বলে জানতে পেরেছি।’

জেলা প্রশাসকের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুল হক পাটোয়ারী বলেন, ‘তদন্তের শুরুতেই আমরা ঘটনাস্থল ও সে রাতে কর্তব্যরতদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা ঘটনার মূল কারণ বের করব। কোনো অবস্থাতেই তদন্ত কারও ওপর প্রভাবিত হবে না। ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি।’

তবে ওইদিনের ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমি সালাম সাহেবকে যুগ্ম সচিবের বিষয়ে জানিয়েছি। ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্স রেখে সচিবের জন্য অপেক্ষা করার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়নি। বিষয়টি সম্পূর্ণ ঘাট কর্তৃপক্ষের বিষয়। অ্যাম্বুলেন্স বসিয়ে রেখে সচিব মহোদয়কে নিতে হবে এমন কোনো কথা বলিনি।’

Bootstrap Image Preview