Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৪ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৩১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পদ্মার পানি কমলেও ভাঙন অব্যাহত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০১৯, ০৫:৪০ PM
আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৯, ০৫:৪০ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


পদ্মা নদীর পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল পর্যন্ত নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের মুন্সীকা‌ন্দি এলাকায় প্রায় ১৫টি পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। আর প্রায় ৩০টি বাড়িঘর ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে। ইতোমধ্যে ভাঙন রো‌ধে (পাউ‌বি) এক হাজার ৯৪৬টি বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলেছে।

শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউ‌বি) অফিস সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দি‌কে শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। 

গত সোমবার পর্যন্ত পদ্মা নদীতে পানি বাড়তি ছিল। মঙ্গলবার রাত ১টা থেকে পদ্মার পানি কমায় নাও‌ডোবা মুন্সীকা‌ন্দি এলাকা ভাঙ‌তে শুরু করেছে বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, নাওপাড়া মুন্সীকা‌ন্দি গ্রামে মঙ্গলবার রাত থেকে নদী ভাঙন চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেখানকার প্রায় ১৫টি পরিবারের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকি‌তে প্রায় ৩০টি পরিবার।

নওপাড়া মুন্সীকা‌ন্দি গ্রামের ল‌তিফ মাধবের স্ত্রী মনোরা বেগম। তিনি জানান, দুই বছর আগেও তার স্বামীর ১০০ শতাংশ জমি ছিল। কিন্তু সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙনে তা‌দের ফসলি জমি, ভিটেমাটি নদী গর্ভে চলে যায়।

জমি, বাড়ি সব হারিয়ে গত বর্ষার পর স্থানীয় ইউপি সদস্য এনা‌য়েতুল্লাহর দুই শতাংশ জমির উপর ‌দোচালা টিনের ঘর ক‌রে বৃদ্ধ স্বামী, ছেলে, ছেলের বউ, দুই নাতনী‌কে নি‌য়ে থাকতেন ম‌নোরা। কিন্তু গত মঙ্গলবার রা‌তে সেই জমি ও ঘর‌টি নদী গর্ভে চলে যায়।

স্থানীয় না‌সির আহমেদ বলেন, আমা‌দের গ্রাম‌টি‌তে ভাঙন শুরু হ‌য়ে‌ছে। ভাঙনে অনেকগু‌লো পরিবার তা‌দের জমি, গাছপালা, ঘরবাড়ি হা‌রি‌য়ে‌ছে। দ্রুত ভাঙন রো‌ধ করা প্র‌য়োজন। যারা ভাঙনে সবকিছু হা‌রি‌য়ে‌ছেন তা‌দের সরকারিভাবে সাহায্য-সহ‌যো‌গিতা করা উচিৎ। 

শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বো‌র্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী সুমন চন্দ্র বনিক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ভাঙন রো‌ধে বুধবার নওপাড়া মুন্সীকা‌ন্দি এলাকায় এক হাজার ৯৪৬টি বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফালা‌নো হ‌য়ে‌ছে। ওইখানে ৪ হাজার ৪৮৭টি জিওব্যাগ ফালা‌নো হবে। 

নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তি রুপা রায় বলেন, আমাদের নড়িয়া উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের চারিমন্ডল মৌজা ৭ নম্বর ওয়ার্ডে গত পরশুদিন থেকে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। সেখানে এ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ২৫টি। সে পরিবারগুলোকে আমরা ইতোমধ্যে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের একটি আশ্রায়ন প্রকল্প আছে সেখানেই মধ্যে ঘর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং আমরা এ সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সেখানে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছি।

এছাড়াও আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা রয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে যে কোনও সময় সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত আছি। ইতোমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ডের টিম সেখানে চলে গিয়েছে এবং জিও ব্যাগ ফেলার জন্য প্রস্তুতি কার্যক্রম আজকে থেকেই গ্রহণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বর্ষা মৌসুমে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় স্মরণকালের ভয়াবহ ভাঙনে পদ্মা তীরবর্তী ৮ কিলোমিটার এলাকার পাঁচ হাজার ৮১ পরিবার গৃহহীন হয়েছিল।

পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে ছিল নড়িয়া উপজেলার ৫ শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মসজিদ, একটি বেসরকারি ক্লিনিক, উপজেলার এক মাত্র ৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালের ভবন, ৮ কিলোমিটার পাকা সড়ক ও পৌরসভার ৩ বর্গ কিলোমিটার জায়গা।

 

Bootstrap Image Preview