Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২১ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কলেজের নাম দিয়ে অভিনব প্রতারক চক্রের সন্ধান

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০১৯, ০৫:০২ PM
আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯, ০৫:০২ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর খিলক্ষেত ও নিকুঞ্জ এলাকায় এক অভিনব প্রতারক চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হোস্টেলের নামে বয়স্ক ও নিঃসন্তান বাড়িওয়ালাদের বাড়ি ভাড়া নেয় চক্রটি। এরপর মিথ্যা মামলা দিয়ে নাজেহাল করে বাড়ি দখলের চেষ্টা করে।

খিলক্ষেত এলাকার এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অভিযোগ আসার পর, অনুসন্ধানে মিললো এই চক্রের প্রতারণার নানা কাহিনী। এমনকি, বাড়ি ভাড়া নিয়ে ভাড়া পরিশোধ না করে উল্টো হয়রানি করে মামলা দেয়ার ঘটনা।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া নেয়া হয় রেসিডেন্সিয়াল ল্যাবরেটরি কলেজ ও হোস্টেলের নাম দিয়ে। আজিজুর রহমান সুমন এই চক্রের হোতা। সুমনের বিরুদ্ধে খিলক্ষেত ও নিকুঞ্জ এলাকায় বেশকটি মামলা ছাড়াও রয়েছে অন্তত দশটি সাধারণ ডায়েরি।

ভুক্তভোগী সৈয়দ ইয়াসমিন জায়েদী বলেন, বাড়ি ভাড়া নেয়ার পর সে এখন আর আমাদেরকেই বাড়িতে ঢুকতে দেয় না। সে আমাদের থেকে ভাড়া নিয়ে আমাদেরকেই বলছে ডাকাত। বাড়ির মালিক হয়েও আমরা বাড়িতে ঢুকতে পারব না।' এখন সে ভাড়াও ঠিকভাবে দিচ্ছে না বাড়িও ছাড়ছে না বলে অভিযোগ করেন এই ভুক্তভোগী।  

আর ভুক্তভোগী সৈয়দ জাফর জায়েদী বলেন, 'সে প্রথম থেকেই ভাড়া দিতে ঝামেলা করত। এরপর, ভাড়ার জন্য বার বার তাগাদা দিলে সে উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়।'

আরেক ঘটনায় জানা যায়, খিলক্ষেত এক নম্বর রোডে ভাড়ার টাকা চাইতে গেলে আশি বছর বয়সী বাড়ির মালিক বাদশা মিয়াকে মারধর করে সুমন। বাদশা মিয়াকে উদ্ধারের সময় পুলিশের ওপরও হামলা চালায় সে। পাওনা ৩৫ লাখ টাকা পরিশোধের বদলে, আশি বছরের বৃদ্ধের নামে দেয়া হয় ডাকাতির মামলা।

সুমনের কাছে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা পাবেন বলে জানান বাড়ির মালিক বাদশা মিয়া। এখন সে টাকাও দিচ্ছে না উল্টো হয়রানি করছে বলেও জানান এই বাড়ির মালিক।

ভাড়ার নামে প্রতারণা ও হয়রানির ব্যাপারে খোঁজ নিতে খিলক্ষেত থানায় গেলে পুলিশ জানায়, অনেক অভিযোগই তাদের কাছে এসেছে। তদন্ত করতে গিয়ে তাদেরও হয়রানির শিকার হতে হয়।

এ বিষয়ে খিলক্ষেত থানার ওসি (তদন্ত) আদিল হোসেন বলেন, 'সুমনের বিরুদ্ধে থানায় আট থেকে দশটি জিডি রয়েছে। এছাড়া পুলিশকে হেনস্থা করার মামলাসহ দু’টি মামলা আছে।' তার জন্য থানায় দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তারাও অতিষ্ঠ বলে মন্তব্য করেন আদিল হোসেন। এমনকি পুলিশের ওপর হামলা করে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।

বর্তমানে সুমনের দায়ের করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বা পিবিআই। বাড়িওয়ালাদের বিরুদ্ধে ভাড়াটিয়া সুমনের দায়ের করা মামলা আদালত খারিজ করে দেয়। নারাজির পর তা তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো ইনভিস্টিগেশন-পিবিআই। তদন্তকারী সংস্থাটি জানায়, মামলার সত্যতা পাওয়া যায়নি।  উল্টো সুমনের বিরুদ্ধেই মিলছে নানা অভিযোগ।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার জানান, সে এমন সব বাড়িগুলো টার্গেট করে যে বাড়িগুলোর শক্তিশালি কোনো ওয়ারিশ নেই। এরপর সে দীর্ঘদিন ভাড়া দেয় না। বর্তমানে এই ঘটনার তদন্তে কাজ চলছে জানিয়ে তিনি এটিকে প্রতারণার একটা চক্র হিসবেই অভিহিত করেন।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আজিজুর রহমান সুমনের এই প্রতারণা চক্রে রয়েছেন তার পরিবারের সদস্য ও কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী। মূলত আইনের ফাঁকফোকরকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন তারা।

সুত্রঃ ডিবিসি নিউজ

ডিবিসি নিউজের ভিডিও লিঙ্ক

https://www.facebook.com/DBC.NEWS/videos/850913071948370/?t=0

Bootstrap Image Preview