Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৯ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রতিবন্ধী না হয়েও ভাতার কার্ড পেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ধনাঢ্য কোটিপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৭ জুলাই ২০১৯, ০৫:৫৩ PM
আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯, ০৫:৫৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


প্রতিবন্ধী না হয়েও অসচ্ছল প্রতিবন্ধী হিসেবে সরকারি ভাতার কার্ড পেলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের উত্তম শিল্পালয়ের মালিক উত্তম কর্মকার। তিনি উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের দক্ষিণ কালিকচ্ছ কর্মকারপাড়ার সুধাংশু কর্মকারের ছেলে।

এদিকে একজন সুস্থ-সবল ও স্বাভাবিক চলাফেরার ধনাঢ্য মানুষের ভাগ্যে অসচ্ছল প্রতিবন্ধীর ভাতার কার্ড জুটেছে, বিষয়টি নিয়ে মুখরোচক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে বিষয়টি জেনে উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের লোকজন নড়েচড়ে বসেন।

বুধবার (১৭ জুলাই) সকালে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জহিরুল ইসলাম সেই প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডটি জব্দ করেন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তথ্যগত ভুলে এই কার্ড উত্তম কর্মকারের নামে হয়ে গেছে। আসলে কার্ডটি তার প্রতিবন্ধী সাত বছর বয়সী ছেলের নামে হওয়ার কথা ছিল। উত্তম কর্মকারের নামে হওয়া ভাতার কার্ডটি বাতিল করা হবে।

উপজেলা সমাজসেবা বিভাগের দায়িপ্রাপ্ত কালিকচ্ছ ইউনিয়ন সমাজকর্মী মোছাঃ রুবি বেগম বলেন, কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যানের কথায় বিশ্বাস করে উত্তম কর্মকারের নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান বলেছিলেন উত্তম কর্মকার একজন অসচ্ছল প্রতিবন্ধী মানুষ। কিন্তু পরে আমরা জানতে পারি তিনি প্রতিবন্ধী নন। তার নামে সুবর্ণ নাগরিকের স্মার্ট কার্ডও হয়নি।

এদিকে কার্ড বরাদ্দের প্রায় তিনমাস পর মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবন্ধী কার্ড ফিরিয়ে দিতে খোদ উত্তম কর্মকার উপজেলা সমাজসেবা অফিসে হাজির হন। জানা যায়, উত্তম কর্মকার পারিবারিকভাবে ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। তার বড় দুই ভাই একজন প্রবাসে ব্যবসা করেন, অন্যজন দেশে। তিনি নিজে একজন সফল স্বর্ণ ব্যবসায়ী। উত্তম কর্মকার ব্যক্তিগত চলাফেরার জন্য কয়েকমাস আগে ৩২ লক্ষাধিক টাকায় একটি বিলাসবহুল গাড়ি কিনেন। রাজধানী ঢাকায় তিনি ছোটখাট একটি ফ্য্যাক্টরিও গড়েছেন।

উত্তম কর্মকার সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলে প্রতিবন্ধী। এই কার্ড আমার ছেলের নামে হওয়ার কথা ছিল। অনুমান তিনমাস আগে ইউপি চেয়ারম্যান ভাতার কার্ডটি আমাকে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, বয়সের জটিলতায় আমার প্রতিবন্ধী ছেলের নামে ভাতার কার্ড হয়নি। তাই ভাতার কার্ড আমার নামে বরাদ্দ করিয়েছেন তিনি। বিষয়টি জেনে আমি প্রথমে আশ্চর্য হয় এবং এই কার্ড আমি গ্রহণ করিনি। আমি ইউপি চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করি, আমার নামে বরাদ্দকৃত কার্ডটি পরিবর্তন করে যেন কোন দুস্থ অসচ্ছল প্রতিবন্ধীকে দেওয়া হয়। এই কার্ড চেয়ারম্যানের হাতেই রয়েছে। আমি এই কার্ডের বিপরীতে ভাতার টাকা উত্তোলন করিনি। অথচ আমার ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার অরুণা দেবের স্বামী শ্যামল দেব বহুবার তাগাদা দেন, আমি যেন ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করি। কিন্তু আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি।

এ ব্যাপারে কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত আলী বলেন, উত্তম কর্মকারের নামে আমিই প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করিয়েছি। উত্তম কর্মকারের হাতের একটি আঙ্গুল অর্ধেকটা কাটা, সেই হিসেবে তিনি প্রতিবন্ধী। ইউপি চেয়ারম্যান প্রশ্ন রাখেন, ধনাঢ্য ব্যক্তি কি প্রতিবন্ধী ভাতা পেতে পারেন না ?

Bootstrap Image Preview