Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কোরবানির আগে যে কৌশলে বাড়ানো হচ্ছে পেঁয়াজের দাম

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩৬ PM
আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৯, ০৮:৩৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। যশোর বড়বাজারে গত সপ্তাহে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হয়েছিল ২৫ টাকা। দুই-তিন দফা দাম বেড়ে সোমবার বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকায়। তবে দু-একজনকে বাছাই করা বড় সাইজের পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতেও দেখা গেছে। আর ২০ টাকার ভারতীয় বড় পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়।

জানা গেছে, চাষিদের ঘরে রাখা পেঁয়াজের মজুত শেষ। অতি মুনাফালোভী এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর মজুত করা পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। মূলত বাজার এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। ভারতীয় আমদানি করা পেঁয়াজেও বাজারে মূল্যবৃদ্ধির গতি শ্লথ হচ্ছে না।

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে এই আশঙ্কা ভোক্তা সাধারণের। তাই সময় থাকতে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন ক্রেতারা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজার এখন মজুতদারের হাতে চলে গেছে। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ হাটে-বাজারে অল্প পরিমাণে সরবরাহ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে।

তারা বলেন, প্রতি বছর কোরবানি ঈদের সময় বাজারে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হতে দেখা যায়। এই সময়টা চাষিদের হাতে পেঁয়াজ মজুত থাকে না। একশ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর ঘরে হাজার হাজার মন পেঁয়াজ গুদামজাত করা থাকে। বাজার বুঝে তারা অল্প অল্প করে পেঁয়াজ বিক্রি করতে থাকেন। এতে করে বড় ধরনের একটা সংকট তৈরি হয়। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তারা দুই হাতে লুটে নেন কাড়ি কাড়ি টাকা।

ভুক্তভোগী ক্রেতারা বড় ধরনের সংকট সৃষ্টির আগে এর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

চাষিদের হাতে যখন পেঁয়াজ ছিল তখন বাজার স্বাভাবিক গতিতে চলছিল বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

তারা বলেন, তখন দামও ছিল সহনীয় পর্যায়ে। কিন্তু চাষিদের মজুত পেঁয়াজ শেষ হওয়ার পরপরই বাজার চলে গেছে সিন্ডিকেটদের নিয়ন্ত্রণে।

এদিকে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির গতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি বাড়ানো একটি উপায় হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, তবে বর্তমানে ভারতে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ।

বড়বাজার কালীবাড়ী সংলগ্ন সবজি বাজারের আড়তদার মদিনা ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী শেখ জিয়া বলেন, ‘বর্তমানে ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। কিন্তু সেখানেও পেঁয়াজের জোগান কমে এসেছে। এরপর দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের পেঁয়াজ বাজারে আসলে দাম অনেকটা কমে আসবে এবং বাজারও নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তবে ওই পেঁয়াজ উঠতে এখনো মাসখানেক সময় লাগবে।’

যশোর বড়বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা সাধারণত সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকা থেকে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ কিনে নিয়ে আসেন। সেখানকার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আমদানিকারদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে গুদামজাত করেন। এ কারণে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় অসংখ্য গুদাম নির্মাণ করা হয়েছে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমদানিকারকরা তাদের পেঁয়াজে পচন ধরলে সেগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন।

সোমবার সকালে ভোমরার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়।

তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও ভোমরায় ৫০/৬০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বিক্রি করতেন। কিন্তু ভারতে পেঁয়াজ সংকটের কারণে এখন ১০/২০ গাড়ি পেঁয়াজ তারা কিনতে পারছেন।

সোমবার যশোরে বাজার করতে আসা লোন অফিস পাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী গোলাম তাহের টগর বলেন, ‘কোরবানি ঈদে হয়ত ৬০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনতে হবে’।

আরেক ক্রেতা বেজপাড়ার মকবুল সর্দার পেঁয়াজ সিন্ডিকেটদের লাগাম টেনে ধরতে এখনই প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন।

Bootstrap Image Preview