পটুয়াখালীর কলাপাড়ার পায়রা বন্দর থেকে কোষ্টগার্ড সদস্যরা ৫১৯ জেলেসহ ৩২টি ভারতীয় মাছ ধরার ট্রলার উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে রেখেছেন।
রবিবার (৭ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমার রাবনাবাদ চ্যানেলে অনুপ্রবেশ করলে পায়রা বন্দর কোষ্টগার্ড কর্তৃপক্ষ তাদেরকে ট্রলারসহ আটক করে কোস্টগার্ড স্টেশনে নিয়ে আসেন।
স্থানীয় জেলেরা দাবি করে বলেন, সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় ঢুকে অবাধে মাছ শিকার করছে।
এ বিষয়ে পায়রা বন্দর কোষ্টগার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মো. রেজাউল করিম জানান, ট্রলার এবং জেলেদের নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে, যেহেতু অনেকগুলো ট্রলার। এছাড়াও কোনো ট্রলারে ২০ জন, ২২ জন, আবার কোনো ট্রলারে ১৮ জন, ১৭ জন করে জেলে রয়েছেন। তাই আটক হওয়া জেলেদের সঠিক সংখ্যা জানানো সম্ভব এবং তাদের তালিকা তৈরি করার বিষয়টি সময় সাপেক্ষ। তবে ট্রলারগুলোতে কোন অবৈধ জিনিসপত্র রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে কোস্টগার্ড সদস্যরা।
এদিকে মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দর আড়তদার সমিতি সূত্রে জানা যায়, সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাংলাদেশি জেলেরা সমুদ্রে মাছ স্বীকার না করলেও থেমে নেই ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরা। বাংলাদেশ জলসীমায় মাছ ধরছিল এসব জেলেরা।
আড়ৎদার সমিতি আরো দাবি করেন, ভারতীয় সমুদ্রে তেমন কোন ঝড়ের পুর্বাভাস না থাকলেও হঠাৎ করে এতোগুলো ট্রলার পায়রা বন্দরে প্রবেশ করায় তাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
বঙ্গোপসাগরে ঝড়ো হাওয়া থাকায় অবৈধভাবে আশ্রয় নিয়েছে এরা। ভারতীয় ট্রলার প্রতিদিন বাংলাদেশি জলসীমায় ঢুকে এমনিভাবে রুপালী ইলিশ শিকার করছে। বাংলাদেশি জেলেরা ভারতের জলসীমা লংঘন করলে মাসের পর মাস জেল খেটে দেশে ফিরতে হয়। অথচ ওদের জন্য আমাদের দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের কোন শাস্তি নেই।
ভারতীয় জেলেরা উৎসাহিত হচ্ছে জলসীমা লংঘনে। এছাড়া সমুদ্র পথে আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্র সক্রিয় থাকায় বিষয়টি তদন্তের প্রয়োজন বলে দাবি করছেন ওই সূত্রটি। যদিও ইতোমধ্যে শাড়ী-কাপড় ও মাদকের বেশ কয়েকটি বড় চালান ধরা পড়ে র্যাব ও কোষ্ট গার্ডের হাতে।
এ বিষয়ে আটককৃত প্রদীপ-০৩ ট্রলারের জেলে শ্রীমন্ত দাস জানান, তারা সাগরবক্ষে মাছ শিকারকালে ঝড়ের কবলে বহরে থাকা দুটি ট্রলার ডুবে যায়। শনিবার রাতে ঝড়ের কবলে তারা সকলে দিক হারিয়ে বাংলাদেশি ট্রলারের সঙ্গে কিনারে আশ্রয় নিতে থাকে। এক পর্যায়ে রামনাবাদে এসে আশ্রয় নেয়। অধিকাংশ জেলের বাড়ি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের ২৪ পরগণা এলাকায়।
কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপ কুমার দাস জানান, জেলেরা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী এবং প্রত্যেকেই বাংলা ভাষায় কথা বলেন।
কলাপাড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. মুনিবর রহমান জানান, জেলেরা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে বাংলাদেশি জলসীমায় নিরাপত্তার কারণে প্রবেশ করেছে।