Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শাহবাগ থানার ওসির কক্ষে আয়েশেই ছিলেন ডিআইজি মিজান

ওসির কক্ষে ডিআইজি মিজানের ১৫ ঘণ্টা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ জুলাই ২০১৯, ১২:১৪ PM
আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৯, ১২:১৪ PM

bdmorning Image Preview


দুদকের মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে আজ সকালে আদালতে নেওয়ার আগ পর্যন্ত ডিআইজি মিজানুর রহমান শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে ছিলেন।

সোমবার (১ জুন) বিকালে হাইকোর্ট এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে ডিএমপি রমনা জোনের এডিসি আজিমুল হকের গাড়িতে করে তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে আসা হয়।  এরপর মঙ্গলবার (২ জুন) সকাল ১০টায় আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত প্রায় ১৫ ঘন্টা ওসির কক্ষেই অবস্থান করেন সদ্য সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এই ডিআইজি।

এই ১৫ ঘন্টায় ওসির কক্ষের বাইরে কোথাও না গেলেও আয়েশেই ছিলেন ডিআইজি মিজানুর রহমান। সেখানে তার দেখভালের জন্য ছিলেন অন্তত পাঁচ জন পুলিশ সদস্য। এছাড়া, সার্বিকভাবে বিষয়টি তত্ত্বাবধান করেছেন ওসি আবুল হাসান। থানার পুলিশ সদস্যদের বাইরে আরও এক ব্যক্তি তার খোঁজখবর রেখেছেন। তবে, তিনি নিজের নাম না বললেও, পরিচয় দিয়েছেন থানার স্টাফ হিসেবে।

ডিআইজি মিজান ওসির কক্ষে প্রবেশের পর থেকে কক্ষটি ভেতর থেকে লক করে দেওয়া হয়। ভেতর থেকে অনুমতি সাপেক্ষে পুলিশ সদস্যরা প্রবেশ করেন।

ওসির কক্ষে মিজানুর রহমান ছাড়াও আরও দুজন কর্মকর্তা ছিলেন। দুজনই এসআই পদমর্যাদার। তাদের একজন পোশাকে ও অন্যজন সাদা পোশাকে ছিলেন। এই দুজনের বাইরে ওসির কক্ষে নিয়মিত আনাগোনা করছেন আরও দুজন এসআই।

ডিআইজি মিজান আসার পর নিজ কক্ষ ছেড়ে পাশের পরিদর্শকের (তদন্ত) কক্ষে বসে দাফতরিক কাজ সারছেন ওসি আবুল হাসান। থানায় ওসির কাছে আসা সাহায্য প্রার্থীরাও তার সঙ্গে দেখা করছেন ওই কক্ষে।

রাত ৮টার দিকে ডিআইজি মিজানের জন্য খাবার নিয়ে আসেন ওসির বডি গার্ড কামরুল। একই ব্যক্তি রাত সাড়ে আটটার দিকে বাইরে থেকে পুলিশের এই কর্মকর্তার জন্য ওষুধ নিয়ে আসেন। অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে আসা হয় রাত ৯টা ১৫ মিনিটে। রাত ১১টায় তার খোঁজখবর নিতে থানায় আসেন ডিএমপির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। শাহবাগ থানায় ওসির কক্ষে ২০ মিনিট সময় কাটান তিনি। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সৌজন্যতার খাতিরে এসেছি। এর বেশি কিছু নয়।’

রাতের খাবারে মিজানকে কী দেওয়া হয়েছে তা সরাসরি বলতে রাজি হননি থানার কোনও কর্মকর্তা। তবে, ওসি আবুল হাসান বলেন, ‘রাতের খাবার বাইরে থেকে আনা হয়েছে।’

থানা সূত্র জানায়, অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে আসার পর তিনি ড্রেস পাল্টান। এরপর রাতে ওসির কক্ষের ভেতরে থাকা বিশ্রাম কক্ষে ঘুমান ডিআইজি মিজান।

ডিআইজি মিজানুর রহমান খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেছেন বলে থানার একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সকাল ৮টার দিকে নাস্তা খান তিনি, যা বাইরে থেকে আলাদাভাবে আনা হয়। নাস্তা শেষে আদালতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন মিজানুর রহমান। এরপর বেলা ১০টার দিকে শাহবাগ থানার গাড়িতে করে তাকে আদালতে নেওয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে তার সঙ্গে বাইরে থেকে কেউ দেখা করতে আসেননি।

প্রসঙ্গত, এর আগে নারী নির্যাতনের অভিযোগে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার হওয়া মিজানুর রহমানের অবৈধ সম্পদের তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু, এই তদন্ত করতে গিয়ে দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া ১৯ জুন আদালত এক আদেশে মিজানুর রহমানের স্থাবর সম্পদ ক্রোক এবং ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২৪ জুন তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

Bootstrap Image Preview