Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২২ বুধবার, মে ২০২৪ | ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আগোরার প্রতারণা: ইলিশ না কিনেও ৪ হাজার টাকা বিল দিল ক্রেতা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ জুন ২০১৯, ০৭:৩৬ PM
আপডেট: ১১ জুন ২০১৯, ০৭:৩৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


ইলিশ মাছ না কেনা সত্ত্বেও ক্যাশ মেমোতে সেই মাছের বিল ঢুকিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে সুপারশপ আগোরার বিরুদ্ধে।

শাহরিয়ার পলাশ নামের এক ক্রেতার অভিযোগ, ইলিশ মাছ না কিনেও তার ক্যাশ মেমোতে সে বাবদ চার হাজার ১৫০ টাকা বিল জুড়ে দেয়া হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির মগবাজার আউটলেটের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ। তিনি ওই আউটলেটের একজন নিয়মিত ভোক্তা। ইতিমধ্যে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরে এ বিষয়ে মামলা করেছেন শাহরিয়ার পলাশ।

তিনি জানান, গত শনিবার আগোরার মগবাজার আউটলেট থেকে পরিবারের জন্য মাসিক বাজার করেন। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ডাল, মশলা, তেল, সাবান ইত্যাদি কিনে যথারীতি কাউন্টারের লাইনে দাঁড়ান। সব পণ্য বুঝে নিয়ে কাউন্টার থেকে যে বিল পরিশোধের কথা বলা হয় তাতে ভুল (অস্বাভাবিক বিল) রয়েছে বলে মনে হয় তার। টাকার পরিমাণ আরও কম হতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করলে কাউন্টার থেকে জানানো হয়, বিল তৈরিতে আগোরার কোনো ভুল হয় না। কিন্তু বাসায় গিয়ে বিল মেলাতে গিয়ে হতবাক হন তিনি। কোনো ইলিশ মাছই কিনেননি তিনি অথচ ক্যাশ মেমোতে সে বাবদ ৪,১৫০ টাকার বিল দেখানো হয়েছে।

বিষয়টির সুরাহা করতে সকালে আউটলেটের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে দেখা করলে তিনি জানান, তাদের আউটলেটে ইলিশ মাছই নেই। তিনি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন এবং এমন ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে অতিরিক্ত নেয়া টাকা ফেরত দেন।

এসময় আউটলেটে ইলিশ মাছ না থাকার পরেও বিলে কি করে ঢুকল এমন প্রশ্ন রেখে শাহরিয়ার পলাশ বিগত ২ বছরের বিল স্ট্যাটাস প্রিন্ট চান ম্যানেজারের কাছে। কিন্তু ম্যানেজার জানান, তাদের নিকট নিয়মিত ক্রেতাদের মাত্র ২ মাসের বিলের ডাটা সংরক্ষিত আছে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ মঙ্গলবার একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। পাঠকদের উদ্দেশে ভুক্তোভোগী শাহরিয়ার পলাশের সেই ফেসবুক স্ট্যাটাস ও ক্যাশ ম্যামোটি তুলে ধরা হল-

#আগোরার_প্রতারণা

‘গত শনিবার অফিস শেষ করে আগোরা মগবাজার আউটলেটে যাই। বাজার করার পর কাউন্টারে টাকা দেয়ার সময় দেখলাম বিল অস্বাভাবিক বেশি। জিজ্ঞেস করার পর কাউন্টারে থাকা ছেলেটি বলল, আমাদের ভুল হয় না। বাসায় এসে মিলিয়ে দেখি আমি ইলিশ মাছ কিনিনি। অথচ তার দাম ৪,১৫০ টাকা ধরা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই গিয়ে দেখি আউটলেট বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

সেখানে থাকা সিকিউরিটির লোক কোনোভাবেই নাম্বার দিবে না। শেষে মামলা করব এবং তাকেও আসামী করব, এই কথা বলার পর সে অনেকটা বাধ্য হয়ে সুপারভাইজার মোস্তফার নাম্বার দেয়। আমি তাকে বিষয়টি জানালে তিনি সকালে যেতে বলেন।

সকালে আবার যাওয়ার পর ম্যানেজার ফারুক সাহেবের দেখা পাই। তিনি বলেন, তাদের আউটলেটে ইলিশ মাছই নেই। তিনি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন এবং আমার টাকা ফেরত দেন।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যারা মাসিক বাজার এসব সুপারশপে করি, তা কি কখনও মিলিয়ে দেখি? তারা কি সব সময়ই এমন প্রতারণা করে আমাদের পকেট কাটছে?

আগোরার জন্য আমার বিকল্প ৩ প্রস্তাব

প্রতারণা ধরা পড়ার পর আমি তাদের কাছে আমার ২ বছরের বিল চাই। তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় চায়। আমি সময় দিয়ে চলে আসি। সন্ধ্যায় শিলা নামের একজন আগোরার নাম্বার থেকে ফোন করে জানায় তাদের কাছে মাত্র ২ মাসের বিল রয়েছে। আমি একথা শোনার পর তাদের বিকল্প ৩ টি প্রস্তাব দেই।

১. তারা আমার গত ২ বছরের বিল দিবে। যাতে আমি মিলিয়ে দেখতে পারি এ রকম অদ্ভুত কোনো বিল আমার নামে করা হয়েছে কিনা

অথবা

২. যদি ম্যানেজার এই অপকর্মে জড়িত না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মীকে যথাযথ শাস্তি দিয়ে তা মিডিয়ায় প্রচার করবে।

অথবা

৩. প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা আমার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে এটা ধরে নিয়ে ২ বছরে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা সমাজের অসহায় সুবিধা বঞ্চিত মানুষের মাঝে তা বিতরণ করতে হবে। মিডিয়ার তা প্রচার করতে হবে।

এ নিয়ে মিসেস শিলা আমাকে বেশ কয়েকবার ফোন করেন এবং আমার বাসায় আসতে চান। আমি তাকে অনুরোধ করি, আমার শর্তে রাজি থাকলে আমার অফিসে আসতে।

তাদেরকে গতকাল পর্যন্ত সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা বিকল্প ৩ টি শর্তের কোনোটিই পালন করতে পারেন নি। শেষ পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যায় ম্যানেজারের সাথে আমার ফোনো কথা হয় এবং তিনি জানান আমার ২ বছরের বিল দিবেন তবে আমাকে ১ মাস সময় দিতে হবে।

আমি পরিস্কার বুঝতে পারছি, এটা কালক্ষেপন করার কৌশল, এবং প্রতারণার নতুন কোনো ফাঁদ। তাই আমি আজ এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছি। না হয় তাদের এই প্রতারণা চলতেই থাকবে।’

Bootstrap Image Preview