Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাতক্ষীরায় ইউপি চেয়ারম্যানদের সংবাদ সম্মেলন ও স্মারকলিপি প্রদান

রনজিৎ বর্মন শ্যামনগর, প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০১৯, ০৯:৪৮ PM
আপডেট: ২৯ মে ২০১৯, ০৯:৪৮ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ বিডিমর্নিং


সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ‘স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুরক্ষায় ইউনিয়ন পরিষদের অংশীদারিত্ব এবং বিপন্ন জনগোষ্ঠীকে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেবার জন্য বরাদ্দ চাই’ শিরোনামে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

বুধবার (২৯ মে) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জলবায়ু পরিষদ কার্যালয়ে শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুরক্ষায় ইউনিয়ন পরিষদের অংশীদারিত্ব এবং ভাঙনে বিপন্ন জনগোষ্ঠীকে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেবার জন্য বরাদ্দের দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বেড়িবাঁধ সংস্কার, নদী ভাঙন ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করতে হয় ইউনিয়ন পরিষদকে। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের এ খাতে কোনো বরাদ্দ  বা ম্যান্ডেট নেই। স্থানীয়ভাবে দুর্যোগ মোকাবেলা ও বিপন্ন জনগোষ্ঠীকে তাৎক্ষণিক সহায়তা দেয়ার জন্য এই বিশেষ বরাদ্দ বাজেটে রাখার জন্য আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে মুল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এসএম আতাউর রহমান।

এসময় তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নদীভাঙন, বেড়িবাঁধ ভাঙন, লবণাক্ততা, সুপেয় পানির সংকট এ উপজেলার মানুষের জীবন-জীবিকাকে দুর্বিষহ করে তোলে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে শ্যামনগরের মতো উপকূলীয় অঞ্চল হারিয়ে যাবে। আমরা শ্যামনগর উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী বরাবর  স্মারকলিপি প্রেরণ করে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি ও প্রভাব মোকাবেলায় বরাদ্দ প্রদানের আহবান জানাচ্ছি।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে গত দশবছরে শ্যামনগরে সিডর আইলাসহ ১০টি বড় ঘুর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে।

ভবতোষ কুমার মন্ডল আশংকা প্রকাশ করে আরো বলেন, বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন-  আগামী দিনগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা বাড়বে এবং প্রভাব তীব্র হবে। নদীভাঙনের ফলে এ উপজেলার পদ্মপুকুর, আঁটুলিয়া, গাবুরা, মুন্সিগঞ্জ, বুড়িগোয়ালিনি ইউনিয়নে মাইগ্রেশনের সংখ্যাও বেশি। যেমন, শ্যামনগর উপজেলার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পদ্মপুকর ইউনিয়নে জনসংখ্যা ৩৫ হাজার। যা দুর্যোগ মোকাবেলায় আশংকার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

কাশিমাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রউফ বলেন, লবণাক্ততা এই উপজেলার অন্যতম প্রধান অভিঘাত। শ্যামনগর উপজেলা সমুদ্র উপকূলবর্তী এবং নদীগুলো লোনা পানির। ১২৬টি খাল নদী থেকে কৃষি জমি বা চিংড়ি ঘেরে লোনা পানি আনা ও বের করে দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু বর্তমানে খালগুলি অবৈধ দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল, আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু, কৈখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান  শেখ আব্দুর রহিম, গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিএম মাসুদুল আলম, ইশ্বরীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড.জিএম শোকর আলী,রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন ও শ্যামনগর সদর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান বেবী নাজনীন।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ১২টি ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যবৃন্দসহ প্রমুখ।

এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে আরও দাবি জানানো হয়, চিংড়ি চাষের এলাকা নির্দিষ্ট করা ও লবণপানির খালগুলোকে দখলমুক্ত করে খনন করা, সুপেয় পানি সংকট নিরসনে আরও পদ্ধতিতে পানির প্লান্ট, পারিবারিক পানির ড্রাম ও প্লান্ট স্থাপন রেইনওয়াটার হারভেষ্টটিং প্লান্ট স্থাপন করা ও পারিবারিক পুকুর খনন করে মিষ্টি পানি ধরে রাখা।

এসময় মাইগ্রেশন ও পাচার রোধে সরকারি সুযোগ সুবিধা বাড়ানো (ভিজিএফ, ভিজিডি) বাড়ানো, আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি ও প্রান্তিক যুব নারী ও শিশুদের যাতায়াতের রাস্তাগুলো সংস্কার করতে হবে ও সাইক্লোন শেল্টার এর সাথে দুরত্ব কমিয়ে আনতে হবে বলেও দাবি জানান বক্তারা।

Bootstrap Image Preview