সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর এলাকার রূপপুর নতুনপাড়া গ্রামের করতোয়া নদীর তীরে কচুরিপানার ভিতর থেকে গত শনিবার (২৫ মে) উদ্ধার হওয়া অর্ধগলিত অজ্ঞাত শিশুর লাশের পরিচয় পাওয়া যায়।
নিহত শিশুটির নাম শাহাদত হোসেন (৭)। সে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের চন্দনগাতি গ্রামের আসাদুল হক ও শাহিদা খাতুনের ছেলে বলে জানান শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান।
তিনি আরো বলেন, পারিবারিকভাবে বনিবনা না হওয়ায় ৪ বছর আগে আসাদুলের সাথে শাহিদা খাতুনের ডির্ভোস হয়ে য়ায়। এরপর থেকে সাহিদা তার ছেলেকে নিয়ে একই এলাকায় তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। গত ১০ মাস আগে শাহিদা মনিরুল ইসলাম (৩০) নামক একই এলাকার এক রাজমিস্ত্রীকে বিয়ে করে।
বিয়ের পর মনিরুল তেমন কোন কাজকর্ম না করায় শাহিদা চরকায় সুতা লাটাইয়ের কাজ করে স্বামী-সন্তান নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। বিয়ের পর থেকে মনিরুল তার সৎ ছেলে শাহাদতকে কিছুতেই সহ্য করতে পারছিল না।
এরই এক পর্যায়ে মনিরুল ইসলাম বাজার করে দেয়ার কথা বলে গত ১৯ মে বাড়ি থেকে শাহাদতকে নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে ছেলে শাহাদত ও সৎ বাবা মনিরুল নিখোঁজ ছিল। এ ঘটনায় বেলকুচি থানায় একটি জিডিও করা হয়।
তিনি আরো বলেন, লাশটি উদ্ধারের পর জেলার সবগুলো থানা ও আশপাশের থানায় সন্ধান চেয়ে লাশের ছবি পাঠানো হয়। এরই জের ধরে বেলকুচি থানা পুলিশের মাধ্যমে নিহত শিশু শাহাদতের মা শাহিদা খাতুন শাহজাদপুর থানায় এসে লাশের পোষাক দেখে তার ছেলে বলে শনাক্ত করে।
নিহত শিশুর মা শাহিদা খাতুন জানান, পাষণ্ড মনিরুল আমার ছেলে শাহাদতকে নির্মম ভাবে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ওই স্থানে ফেলে পালিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গত রবিবার (২৬ মে) বেলকুচি থানার মাধ্যমে জানতে পারি গত শনিবার (২৫ মে) শাহজাদপুরের করতোয়া নদীর তীর থেকে এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানায় ছুটে যাই। এরপর লাশের ছবি দেখে নিশ্চিত হই এটা আমার ছেলে নিখোঁজ শাহাদতের লাশ।
শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান জানান, লাশ সনাক্তর পর রবিবার রাতে শাহিদা খাতুন নিজেই বাদী হয়ে বর্তমান স্বামী মনিরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। লাশের পরিচয় পাওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘাতক সৎ বাবা মনিরুলকে গ্রেফতারের জন্য হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ।