Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বুধবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৫ মে ২০১৯, ১১:২৮ AM
আপডেট: ১৫ মে ২০১৯, ১১:২৮ AM

bdmorning Image Preview


দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে ঢাকার সাভার সাব-রেজিস্ট্রি অফিস। অভিযোগ অফিসে বছরে হাজার হাজার দলিল সম্পাদিত হলেও বাড়ছে না রাজস্ব।

সাভারে মূলত ভিটি বাড়ি, চালা ও নালা জমিকে ডোবা, বিল, বাগান, টাট্টি ও বোরো ক্ষেত দেখিয়ে অধিকাংশ দলিল সম্পাদন হওয়ায় সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

‘আন্ডারভেল্যু স্টাইল’ কৌশলে সাব রেজিস্ট্রারের পকেট ভারী হচ্ছে বলে অভিযোগও আছে। মূলত এই কৌশলে জমির শ্রেণি বদল করে টাকা হাতানোর তাঁরা।

কিছু দলিল লেখকদের যোগসাজশে সাব-রেজিস্ট্রার প্রতিনিয়ত আন্ডারভেল্যু দলিল করে যে পরিমাণ টাকা হাতাচ্ছেন তার ভাগ যাচ্ছে কয়েক স্তরে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাভার সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার এসকেন্দার আলী তার সময়ে একই দাতা-গ্রহিতার চারটি দলিল করে দুই কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৫ সালে কোন্ডা মৌজায় ১৭৪৭৭ ও ১৭৪৭৮নং দলিলে ৫১৩.২৫ শতাংশ জমির শ্রেনি পরিবর্তন করে ‘টাট্টি’ শ্রেণি দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করে প্রায় ২ কোটি টাকা সরকারকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করেছেন। আর তিনি ও দলিল লেখক হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক কোটি টাকা। অথচ জমিটির প্রকৃত শ্রেণি ‘নাল’। টাট্টি নামে ওই মৌজায় কোনো শ্রেণিই নেই। সাব-রেজিস্ট্রার এসকেন্দার নিজে পকেট ভারী করতেই প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে জমিটি রেজিস্ট্রি করেছেন।

একই সাব-রেজিস্ট্রার ২০১৪ সালে সাভারের ডগরমোড়া মৌজায় ৫ তলা একটি ভবনকে ‘নাল’ শ্রেণি দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। আর সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোয়া ৭ শতাংশ জমির ওপর ৫ তলা ভবনটির শ্রেণি ‘বাড়ি’ কিন্তু এখানেও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কম টাকায় রেজিস্ট্রি করার জন্য সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ‘নাল’ শ্রেণি বসিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। যার দলিল নং-৬৮০৬।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার এসকেন্দার আলী বলেন, আমার প্রতিনিধি সাভার সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে কর্মরত পলাশের সাথে কথা বলেন।

এদিকে বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার আবু তালেব সরকার নিজেও গোপনে ‘আন্ডারভেল্যু’ দলিল সম্পাদন করে সরকারকে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, জামসিং মৌজায় ১০ শতাংশ জমির একটি দলিল শ্রেণি বদল করে রেজিস্ট্রি করেছেন তিনি। ১৬৬৬৭নং দলিলের প্রকৃত শ্রেণি নাল। কিন্তু নিজের পকেট ভারী করার জন্য শ্রেণি পরিবর্তন করে ‘সাইল’ দেখিয়ে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন।

দলিল লেখক মহিদুল রহমান ভান্ডারী এ প্রসঙ্গে বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। সেখানে আমার করার কি আছে!

তবে সাব-রেজিস্ট্রার আবু তালেব সরকার বলেন, তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিল্পাঞ্চল সাভারে দলিল বাড়লেও রাজস্ব না বাড়ায় টনক নড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। চলছে অনিয়মের কারণ অনুসন্ধান। অবস্থা এমন যে সাভার পৌর এলাকার ভেতরে আবাদি জমি, ডোবা, বিল প্রায় অস্তিত্বহীন হলেও শ্রেণি বদল করে বাড়ি, চালা ও নালার জমির ধরণ পাল্টে ওই ধরনের দেখিয়ে গোপনে আন্ডারভেল্যুতে দলিল রেজিস্ট্রি করা হচ্ছে!

Bootstrap Image Preview