পেকুয়ায় জোয়ারের পানি ঠেকাতে সাগর পয়েন্টে নির্মিত হচ্ছে রিংবাঁধ। উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের পাউবো নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধের বিলীন অংশে রিংবাঁধ তৈরির কাজ চলছে। সাগরের জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছিল। বেড়িবাঁধের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ উপচে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। এসময় আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়।
পাউবোর নিয়ন্ত্রিত ৬৪/২বি পোল্ডারের বেড়িবাঁধের বিলীন অংশের জোয়ারের পানি ঠেকাতে স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণ করে। জনদুর্ভোগ ও চরম ভোগান্তি লাঘব করতে ওই স্থানে নির্মিত হচ্ছে রিংবাঁধ।
পাউবোর নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধের মগনামা পশ্চিম অংশ কুতুবদিয়া চ্যানেল সংশ্লিস্ট সাগর এলাকায় রিংবাঁধ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। মগনামা জেটিঘাটের উত্তর দিকে প্রায় ৩০ চেইন বেড়িবাঁধের অধিক ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে এ রিংবাঁধ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন চলছে।
সাগরপয়েন্টে উত্তরপাড়া, হুমায়ুন কবির চৌধুরীর মৎস্যঘের নামক স্থান থেকে বিস্তৃত রিংবাঁধ নির্মিত কাজ চলমান রয়েছে। সুত্র জানায়, ওই মোকাম থেকে প্রায় ৩০ চেইন রিংবাঁধ তৈরির কাজ আরম্ভ হয়েছে। সেটি শরতঘোনা আব্বাছ আহমদ চৌধুরীর ঘোনা পর্যন্ত এ কাজ চলমান থাকবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত অংশে রিংবাঁধ তৈরির জন্য অর্থের যোগান দিচ্ছেন স্থানীয় মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম। তিনি নিজ অর্থায়ন থেকে রিংবাঁধ তৈরির কাজ বাস্তবায়ন করছেন।
শনিবার (৪ মে) সকাল থেকে রিংবাঁধ তৈরির কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। ওই দিন সকালে চেয়ারম্যান ওয়াসিম সরেজমিন ওই স্থান পরিদর্শন করেন।
এসময় সমুদ্রের করাল গ্রাস ও প্রচণ্ড জোয়ারের স্রোত ঠেকাতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে রিংবাঁধ তৈরির কাজের শুভ সূচনা করেন। ওই দিন রিংবাঁধ তৈরির জন্য মাটি কাটার যন্ত্র স্ক্যাভেটর নামায়। যান্ত্রিক সাহায্যে নির্মিত হচ্ছে রিংবাঁধটি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মগনামা ইউনিয়নের পশ্চিম অংশে সাগর পয়েন্টে বিপুল অংশে পাউবোর বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে বিপুল অংশে বেড়িবাঁধ সাগর অংশে বিলীন হয়েছে। চর ও লোকালয় একাকার রয়েছে। পাউবো ক্ষতিগ্রস্ত অংশে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
২০১৭ সাল থেকে এর নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন চলছে। উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়েছে। তারা চরকানাই মোকামে এ পর্যন্ত কাজ বাস্তবায়ন করেনি। ওই অংশটি ঝুঁকি থেকে গেছে। সাগরের সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণির বিরুপ প্রভাবে সাগর উপকূলে প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এতে করে সাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ দিনে জোয়ারের প্রচণ্ড স্রোতে বেড়িবাঁধের ওই অংশ দিয়ে সরাসরি লোকালয়ে প্রবেশ করে।
এসময় মগনামা ইউনিয়নের ফতেহআলীমার পাড়ার উত্তর অংশ,উত্তরপাড়া, হারুনমাতবরপাড়া ও শরতঘোনার আংশিক প্লাবিত হয়। চরকানাই হুমায়ুন কবিরের ঘোনা থেকে আব্বাছ মিয়ার ঘোনা পর্যন্ত ৩০ চেইন অংশে বেড়িবাঁধ উপচিয়ে জোয়ারের পানি ভিতরে প্রবেশ করে।
মগনামা ইউপির সদস্য জসিম উদ্দিনসহ এলাকাবাসী জানায়, নিশ্চিত পানি থেকে আমরা বেঁচে যাচ্ছি। চেয়ারম্যান শনিবার থেকে রিংবাঁধ তৈরির কাজ শুরু করেছে। এ কাজ সমাপ্ত করতে ৩০লক্ষ টাকা ব্যয় হতে পারে।
মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম জানায়, আমরা খুবই শঙ্কিত ছিলাম। মাটি দিয়ে রিংবাঁধ তৈরির কাজ আরম্ভ করেছি। ঠিকাদারের দিকে দৃষ্টি করলে আমার ইউনিয়নবাসী পানিতে তলিয়ে যাবে। মানুষের জানমাল বিপন্ন হবে। তাই ওই চিন্তায় নিজে নেমে পড়েছি রিংবাঁধ নির্মাণ করতে। নিজের অর্থায়নে প্রায় ৩০ চেইন রিংবাঁধ নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। আপাতত বিশাল জনগোষ্ঠী পানি ছোবল থেকে রক্ষা পাবে।