ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণ, যৌন হয়রানি সহ সকল প্রকার সহিংসতার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের মানববন্ধন।
'পরিবার, সমাজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র আজ পর্যন্ত আমাদের যা কিছু শিখিয়েছে, আমরা যা কিছু দেখছি, যা কিছু উচ্চারিত হচ্ছে তা অনেকাংশেই বৈষম্যপূর্ণ। নারীকে মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করতে হবে। এই জন্য সমাজের সকলকে বিশেষ করে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে'।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়োজনে “ভয়াবহ হারে বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণ, যৌন হয়রানি সহ সকল প্রকার সহিংসতার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে আজ ৫ মে, বিকাল ৩.৩০ টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানব বন্ধনে বক্তারা এই আহ্বান জানান। মানব বন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মহিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
মহিলা পরিষদের অন্যতম সহ সভাপতি রেখা চৌধুরী বলেন, 'অনেক সময় নারী নির্যাতনের বিচারকে অন্যদিকে প্রভাবিত করা হয়। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম নারী- পুরুষের সমতা ভিত্তিক একটি সমাজ, রাষ্ট্র গঠনের জন্য কিন্তু আজকে নারীর প্রতি এই ভয়াবহ হারে সহিংসতার চিত্রটি আমাদের উদ্বিগ্ন করে তুলে। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য পথ প্রশস্ত করা হলেও তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময় উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে'।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি দেখে যে প্রশ্নটি আমাদের অনবরত তাড়া করছে তা হলো নারীর প্রতি এই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গী কি রকম। অন্যের পরিবারে যখন কোন নারী সহিংসতার শিকার হয় তখন আমরা গুরুত্ব না দিলেও নিজের পরিবারের সদস্য যখন এই নির্যাতনের শিকার হয় তখন আমরা ক্ষুব্ধ হই'।
তিনি গণপরিবহনে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, 'বিচারের জন্য আমাদের এখনও সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। নারীর প্রতি প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন করে একটি বৈষম্যহীন নারী নির্যাতনমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি'।
সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, 'একজন নারী বা কন্যা যখন সহিংসতার শিকার হয়ে বিচারের জন্য আইনশৃঙ্গলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে যায় সেখানেও তারা ইতিবাচক ব্যবহার পায়না।বিচার চাইতে গেলে সমাজেও তাদেরকে হেয় হতে হয়'।
তিনি ওয়াজ মাহফিলে অনবরত নারী বিদ্বেষী, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য বন্ধ করার দাবি জানান।
মানব বন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাসুদা রেহানা বেগম, ঢাকা মহানগরের সভাপতি মাহাতাবুন্নেসা, সিনিয়র আইনজীবী রাম লাল রাহা।
মানব বন্ধনটি পরিচালনা করেন এডভোকেসি পরিচালক জনা গোস্বামী। বক্তারা ধর্ষণের প্রতি জিরো টলারেন্স ঘোষণার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান এবং মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের আলোকে সবল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সকল প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি নিপীড়ন বিরোধী কমিটি গঠনের বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান।