Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২১ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মাত্র ৫ সেকেন্ডে আইটি বিশেষজ্ঞকে অপহরণ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মে ২০১৯, ০৩:১৭ PM
আপডেট: ০৫ মে ২০১৯, ০৩:১৭ PM

bdmorning Image Preview


আইটি বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান শাহীনকে (৩৮) মাত্র ৫ সেকেন্ডে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের একটি সড়কের ফুটপাত থেকে অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা কর্মকর্তা।

থানা সূত্র থেকে জানানো হয়, সড়কে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এমন চিত্র দেখা গেছে। বর্তমানে এই ভিডিও বিশ্লেষণের কাজ করছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৮টা ৫ মিনিটে শাহীনকে একটি মাইক্রোবাসে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, শাহীনের সঙ্গে থাকা ব্যক্তি চলে যাওয়ার পর তিনি জিএমজি মোড়ের কাছের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি মোবাইলফোন দেখছেন। যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন, তার ১০ গজ দূরেই মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সাদা মাইক্রোবাস ধীরে ধীরে তার দিকে আসছে। এসময় তিন ব্যক্তি তার পেছন দিকে দাঁড়িয়ে যায়। গাড়িটি ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা শাহীনের বরাবর আসার সঙ্গে সঙ্গে তিন ব্যক্তি চ্যাংদোলা করে গাড়ির ভেতরে তাকে ছুড়ে মারে। একজন অপহরণকারী মাইক্রোবাসের ভেতরে ওঠে। শাহীনকে তুলেই দ্রুত মাইক্রোবাসটির দরজা লাগিয়ে দেয়। দরজাটি একবার খুলে যাওয়ার পর মাইক্রোবাসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা দুই অপহরণকারীদের একজন এসে ফের দরজাটি বন্ধ করে দেয়। তখন মাইক্রোবাসটি মহাখালীর দিকে চলে যায়। এরপর অপহরণকারীদের দুজনকে একটি মোটরসাইকেলে চড়ে মাইক্রোবাসটিকে অনুসরণ করতে করতে পেছনে যেতে দেখা যায়।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আরও দেখা যায়, শাহীনকে অপহরণের আগে ৭টা ২২ মিনিটে জিএমজি মোড়ে ওই সাদা মাইক্রোবাসটি এসে অবস্থান নেয়। অপহরণকারীরা প্রত্যেকেই লম্বা এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।

শাহীন বাসায় না ফেরায় বৃহস্পতিবার (২ মে) রাতেই তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার মোবাইলে ফোন দেন। তবে তার মোবাইলফোনটি বন্ধ পান। এরপর তিনি বিষয়টি তার স্বজন ও সহকর্মীদের জানান। তারা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেন। এমনকি হাসপাতালেও রাতে খোঁজ করেন। তবে কোথাও তার সন্ধান পাচ্ছিলেন না। এরপর ৩ মে সকালে শাহীনের স্বজনরা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় যান। শাহীনের মামা সাইফুল ইসলাম একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নম্বর ১২৩) করেন। ঘটনার পর পুলিশ আকিজ হাউজে গিয়ে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে। তারা মাইক্রোবাসটিকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে। তবে শনিবার (৪ মে) সন্ধ্যা পর্যন্ত শাহীনের বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের এসি সালমান হাসান জানিয়েছেন, ‘আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আরও কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। তবে এখনও তেমন কোনও অগ্রগতি নেই। আমরা চেষ্টা করছি।’

শাহীন রাজধানীর মিরপুর ২ নম্বরের ডি-ব্লকের একটি বাসায় সপরিবারে থাকেন। তার ৭ বছরের ছেলে এবং অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ঘটনার পর থেকে মূর্ছা যাচ্ছেন। তারা কোনোভাবেই বুঝে উঠতে পারছে না কেন এমনটি ঘটলো।

শাহীনের ভায়রা (স্ত্রীর বোনের স্বামী) মো. মঞ্জু বলেন, ‘শাহীন বেঙ্গল গ্লাসের সহকারী ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করেন। ভারতে লেখাপড়া করা শাহীন একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। বেঙ্গল গ্লাস ছাড়াও তিনি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চুক্তিতে কাজ করেন। বৃহস্পতিবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের আকিজ হাউজে কাজ করতে যান। সেখান থেকে তিনি এবং তার এক সহকর্মী মান্নান বের হন। তারা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে পাঠাও অ্যাপসে রিকোয়েস্ট দেন। দুজনে আলাদা রিকোয়েস্ট দেন। মান্নানের রাইডার আগে চলে এলে তিনি চলে যান। তখন শাহীন ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিছুক্ষণ পর একটি মাইক্রোবাস তার সামনে এসে দাঁড়ায়। তাকে জোর করে মাইক্রোবাসটিতে তোলা হয়।’

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ডিউটি অফিসার মো. ফারুক বলেন, ‘ঘটনার পর আকিজ হাউজের সামনে থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা কাজ করছেন।’

Bootstrap Image Preview