Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অ্যান্টিবায়োটিক থেকে শিশু ও সুস্থ মানুষের দেহেও ছড়িয়েছে সুপারবাগ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ মে ২০১৯, ০৩:৪০ PM
আপডেট: ০২ মে ২০১৯, ০৩:৪০ PM

bdmorning Image Preview


বাংলাদেশে সুপারবাগ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে বলে মনে করছেন গবেষকরা। শুধু হাসপাতালের আইসিইউ নয়, সুস্থ মানুষের রক্তে ও শিশুদের শরীরে সুপারবাগের অস্তিত্ব মিলছে।

জ্বর, ডায়রিয়া বা গলা ব্যথার চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত একটি অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন। দেশের ফার্মেসিগুলোতে এই গ্রুপের ঔষধ হরহামেশাই পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই তা কিনে নিচ্ছেন, কিংবা ঔষধের দোকানদাররাও দ্রুত অসুখ সারবার জন্য তা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। সমস্যা হলো, প্রয়োজন আর মাত্রা না বুঝেই রোগীরা এই ঔষধ সেবন করছেন।

শুধু অ্যাজিথ্রোমাইসিন নয়, একই কথা খাটে শরীরের কাটা-ছেঁড়া ভালো করবার জন্য ব্যবহৃত পেনিসিলিন বা ডায়রিয়ার জন্য প্রযোজ্য মেট্রেনিডাজলের মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রেও। অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারে এইসব প্রাথমিক অ্যান্টিবায়োটিকগুলো এখন কার্যকারিতা হারিয়েছে। ভয়াবহ তথ্য হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিশালী যেসব অ্যান্টিবায়োটিক রয়েছে, সেগুলো দিয়েও এখন জীবানুদের নিঃশেষ করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ-আইসিডিডিআরবির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও মোলিকিউলার ইকোলোজি অ্যান্ড ম্যাটাপজেনোমিক ল্যাবরেটরির প্রধান মনিরুল আলম বুধবার ডয়চে ভেলেকে বলেন, রোগ জীবাণুর যে অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীলতা, তা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। ডায়রিয়ার জীবাণু বা যে- কোনো ধরনের ইনফেকশন তৈরির জন্য যেসব ব্যাকটেরিয়া বা অনুজীব আছে, সেগুলো প্রত্যেকটিই এখন মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্টস, যেটাকে আপনারা বলতে পারেন সুপারবাগ। অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীল জীবাণু বা সুপারবাগ নিয়ে গত কয়েক বছরে প্রতিষ্ঠানটি বেশ কয়েকটি গবেষণা করেছে। তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো অনেক তথ্যই উঠে এসেছে।

২০০৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ১০৩, ৬৭৯ বোতল রক্তের নমুনা পরীক্ষা করেছিলো আইসিডিডিআরব। তার মধ্যে ১৩ দশমিক ৬ ভাগ রক্তেই রোগের জীবাণুর সংক্রমণ পাওয়া গেছে । এর ৭২ দশমিক ১ ভাগই ছিলো মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট বা বহুবিধ অ্যান্টিবায়োটিক সহনশীল। ২০১৭ সালে চলমান এই গবেষণাটি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

মনিরুল আলম বলেন, ব্লাডে নরমালি কোনো অরগানিজম থাকার সুযোগ নেই। শরীরে রক্তের মধ্যে যখন ব্যাকটেরিয়া চলে যায়, সেটা তখন ভয়ংকর। অর্থাৎ, আপনি যদি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার না করতে পারেন, তাহলে এই ব্লাডের ব্যাকটেরিয়াকে মারার আর কোনো পথ থাকবে না। এর ফলে ঐ ব্যাকটেরিয়াই আপনাকে মারবে। গবেষণাটির ফলাফল বলছে আগে ক্ষতিকর ছিলো না এমন ব্যাকটেরিয়াও এখন সুপারবাগে পরিণত হয়েছে, যা মানুষের রক্তে মিশে গেছে। এই সমস্ত সহজ সাধারণ জীবাণুগুলোই ভয়ংকর মৃত্যুদণ্ড হিসেবে কাজ করছে।

Bootstrap Image Preview