Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২১ মঙ্গলবার, মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যে কারণে শপথ নেননি মির্জা ফখরুল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ মে ২০১৯, ১০:১৭ AM
আপডেট: ০১ মে ২০১৯, ১০:১৯ AM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


একাদশ সংসদ নির্বাচনে জয়ী বিএনপির নির্বাচিত ৫ জন প্রতিনিধি সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন। কিন্তু শপথ নেননি শুধু বগুড়া-৬ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জয়ী ৬ জনের মধ্যে বিএনপি মহাসচিক কেন শপথ নেননি সে বিষয়ে চলছে নানা সমীকরণ ও জল্পনা-কল্পনা।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছেন। তাই প্রতিবাদস্বরূপ তিনি শপথ নেয়া থেকে বিরত থেকেছেন। কারাগারে অন্তরীণ বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রতি দলটির সিনিয়র নেতাদের বরাবরই এমন শ্রদ্ধা-ভক্তির উদাহরণ রয়েছে বলে জানান এই নেতা।

উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের যখন মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়, তখন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। খালেদা জিয়া ছাড়া তারা নির্বাচনে অংশ নেবেন না বলে সে সময় গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। শপথ না নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সে রকম একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন বলে দাবি করেন ওই নেতা।

দলের অন্য ৫ জনপ্রতিনিধি শপথ নিলেও তিনি কেন সংসদে যাবেন না এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব জানিয়েছেন, দলীয় কৌশলের অংশ হিসেবেই তিনি শপথ নিচ্ছেন না।

গত মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার একটি গণমাধ্যমে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শপথ না নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি জানিয়েছেন যে, সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি শপথ নেবেন না। কৌশলের অংশ হিসেবেই বিএনপির ৪ সংসদ সদস্য  শপথ নিয়েছেন।

এদিকে, দলের আরেকটি সূত্র থেকে  ব্জানা যায়, মির্জা ফখরুল ছাড়া বাকি পাঁচজন শপথ নিতে এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে, দলের হাইকমান্ড এ বিষয়ে নেতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে তা তারা মানতে পারতেন না বলে ধারণা করেছে দলটি। ফলে দলকে আরও বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতো।

সূত্র মতে, শপথের বিষয়ে যাদের অনুমতি দেয়া হয়েছে তারা দলের হয়ে সংসদে আর মহাসচিব বাইরে থেকে কথা বলবেন।

অন্যদিকে, গুঞ্জন উঠেছে, ৯০ দিনের শপথ গ্রহণ প্রসঙ্গে উপযুক্ত কারণ জানিয়ে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দিয়েছেন ফখরুল।

এ বিষয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার জন্য সময় বাড়াতে সংসদে কোনো আবেদন করেননি জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে আমি নাকি সময় চেয়ে আবেদন করেছি। আসলে আমি কোনো চিঠিই দিইনি। সময়ও চাইনি। এটিও আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এটি আমাদের কৌশল।

বিভিন্ন মিডিয়ার ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম বলেছেন, আমি নাকি আজকে শপথ নেব। তারা এখন কী লিখবেন।

তিনি আরও বলেন, আমি খুব অবাক হয়েছি। কিছু কিছু পত্রিকা, কিছু কিছু চ্যানেল সেটাকে আবার একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন, যেটা আমরা বলিনি, যেটা আমরা করিনি।

প্রসঙ্গত, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্টিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এই নির্বাচনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির মোট ছয়জন প্রার্থী জয়ী হন। এদের মধ্যে চারজন সোমবার (২৯ এপ্রিল) শপথ নেন। শপথ নেয়া চারজন হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মো. আমিনুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. হারুনুর রশীদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া এবং বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হোসেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত বিএনপির সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান জাহিদ শপথগ্রহণ করেন। পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

নির্দিষ্ট সময়ে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আসনটি শূন্য ঘোষণা করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

 

Bootstrap Image Preview