বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণি এখনো অনেক দূরে। গতকাল পর্যন্ত এটা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে এক হাজার ৬৯৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব এখনো বাংলাদেশে নেই বরং তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে দেশের কিছু অঞ্চলে। গতকাল রাজশাহী ও খুলনা বিভাগসহ ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ঢাকা ও রাঙ্গামাটি অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় থাকার পরও তা আজো অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গতকাল রাজশাহী বিভাগে দেশের সর্বোচ্চ ৩৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠে যায়। খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সার্বিকভাবে সারা দেশেই দিন ও রাতের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান।
ঘূর্ণিঝড় ফণি গতকাল রাতের মধ্যে আরো কিছুটা শক্তি সঞ্চয় করে ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এটা আজ সোমবার গতিপথ পরিবর্তন করে উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হলে তা চলে আসতে পারে বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশের দিকে আসতে থাকলে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রে থাকবে প্রচণ্ড গতি। আবহাওয়া অফিসের কর্মর্তারা জানিয়েছেন, এটা শুরু থেকে অব্যাহতভাবে তাপ ও আর্দ্রতা সংগ্রহ করে শক্তিশালী হচ্ছে।
আমেরিকান, ইউরোপিয়ান ও কানাডিয়ান আবহাওয়া দফতরের তৈরি করা মডেল অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অথবা আশপাশের এলাকা দিয়ে উপকূলে উঠে আসতে পারে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন ভারতের এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হতে পারে।
গতকাল ফণি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ৬৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে এক হাজার ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।