Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

যেসব জায়গায় আঘাত হানবে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৩ PM
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৩ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ভারতের অন্ধ্র উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে শক্তি সঞ্চয় করে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই দুর্যোগটি শেষ পর্যন্ত কোন দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে; তা নিশ্চিত করতে পারেননি আবহাওয়াবিদরা।

ভারতের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার বেলা ১২টায় শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালী থেকে ৭৪০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে, ভারতের তামিলনাড়ুর চেন্নাই থেকে ১০০০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের মাচিলিপত্তম থেকে ১২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং বাংলাদেশের পটুয়াখালী উপকূল থেকে ১৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’।

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঝড়টি ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে অগ্রসর হচ্ছিল উত্তর-উত্তরপশ্চিমে, ভারতের অন্ধ্র উপকূলের দিকে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ার শঙ্কায় বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরগুলোতে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ভারতের আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস ঠিক থাকলে রোববার বিকেল নাগাদ ফণী পরিণত হবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম)। তখন বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। আর সোমবার দুপুরের আগে ফণী পেতে পারে হারিকেনের তীব্রতা। তখন একে বলা হবে ‘ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়, বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ তখন হতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৫৫ কিলোমিটার।

ফণীর মতিগতি বিশ্লেষণ করে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার যে সম্ভাব্য গতিপথ বের করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বুধবার পর্যন্ত এ ঝড় অন্ধ্র উপকূলের দিয়ে অগ্রসর হয়ে তারপর উত্তর দিকে বাঁক নেবে। উত্তাপ আর জলীয়বাস্প সংগ্রহ করে এরপর এগোতে শুরু করবে উত্তর-পূর্ব দিকে। ৩ মে থেকে কমে আসতে পারে এ ঝড়ের শক্তি।

স্কাই মেট ওয়েদার লিখেছে, ফণীর ধীর গতিতে এগোবার একটি কারণ হতে পারে বিষুবরেখার অন্যপাশে ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড় লোরনার উপস্থিতি। পৃথিবীর আবর্তন গতির নিয়ম মেনে উত্তর গোলার্ধে থাকা ফণীর জলের ঘূর্ণি ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরছে। আর দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থানরত লোরনার জলের ঘূর্ণি ঘুরছে ঘড়ির কাঁটার দিকে। দুই ঝড়ের চোখ বা কেন্দ্র রয়েছে মোটামুটি একই দ্রাঘিমায় হাজার কিলোমিটার দূরত্বে।

ভারতীয় আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দুই গোলার্ধে কাছাকাছি দূরত্বে দুটো শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হলে তারা পরস্পরের গতি কমিয়ে দেয়। ফণী এই গতিপথ ধরে অগ্রসর হতে থাকলে বাতাস থেকে প্রচুর জলীয়বাস্প টেনে নেবে। আর ঝড়টি ভারতীয় উপকূলে আঘাত না হানলে দক্ষিণ ভারতে নতুন করে তাপদাহ দেখা দিতে পারে। 

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শনিবার ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে এর নাম দেওয়া হয় ‘ফণী’। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলে এ  নামটি প্রস্তাব করে বাংলাদেশ, যার অর্থ সাপ। সর্বশেষ ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ফেথাই, অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ ও নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড় ‘গজ’ সৃষ্টি হয়েছিল।

Bootstrap Image Preview