Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২০ সোমবার, মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঋণ খেলাপীদের জেলে দিলে দেশের অর্থনীতি চালানো যাবে না: অর্থমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩২ PM
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩২ PM

bdmorning Image Preview


অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন সকল ঋণখেলাপী ব্যবসায়ীকে জেলে দিলে দেশের অর্থনীতি চালানো যাবে না। তবে সবাইকে মাফও করা যাবে না। যারা ইচ্ছেকৃতভাবে খেলাপী হয় যায়, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের এ্যাকশন অবশ্যই নিতে হবে, কঠোর অবস্থানে যেতে হবে।

আজ রবিবার সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এতথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে এ সংক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন গণফোরাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান।

জবাবে অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা সবাই জানি যে, ব্যাংকিংখাত যদি স্বাভাবিকভাবে চলতে না পারে, ঋণভারে জর্জরিত হয়ে যায়, মন্দ ঋণের পরিমাণ বেড়ে যায়- তাহলে আমরা অর্থনৈতিক গতিশীলতা থেকে বিচ্যুত হবো। তাই সকল কিছু বিবেচনায় নিয়েই ব্যাংকের সুদের হার কমাতে হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের সুদের হার কমানো না গেলে পারফর্মিং লোন কমবে না। মন্দ ঋণ তখনই হয়ে যায়, যখন ঋণ নিয়ে তারা পরিশোধ করতে না পারেন। মন্দ ঋণের কারণই হচ্ছে সুদের হার অনেক বেশি। যখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা অথবা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধ করতে না পারেন, তখন সেখানে সঙ্গত কারণেই খেলাপী হয়ে যায়। আর ঋণ খেলাপী রেখে ব্যাংকগুলো অবস্থা এতোটাই দূরাবস্থার মধ্যে আছে, এগুলোকে যদি পরিস্কার না করি তাহলে এগুলো আরো খারাপ হয়ে যাবে। সেজন্যই সুদের হার মোটামুটি সহনশীল অবস্থায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।

মন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের সুদের হার কমিয়ে নিয়ে আসতে পারলেই আমরা সফল হবো। এতে আমাদের কর্মসংস্থান বাড়বে। শিল্প-কারখানাগুলো রক্ষা পাবে। সকলের স্বার্থেই আমরা এই কাজ করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে অনেক বিতর্ক হচ্ছে, অনেকে অনেক রকম কথা বলছে। কিন্তু সারাবিশ্বেই কিন্তু মাফ করে দেয়। আমাদের দেশে মাফ করার কোন ব্যবস্থা ছিল না। কারণ ঋণের জন্য ব্যাংক আর্বিটেশন যেটা আছে, সেটা কার্যকর ছিল না। সেজন্য একবার ব্যাংকে ঢুকলে সেখান থেকে বের হবার পথ ছিল না। আমরা আইনগুলো কার্যকর করে সেই আইনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একটা সহনীয় পরিস্থিতি তৈরি করে এখান থেকে মাফ করার ব্যবস্থা করবো। কারণ সকল ব্যবসায়ীকে জেলে দিলে তো দেশের অর্থনীতি চালানো যাবে না।

দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ নেই : সরকারি দলের সংসদ সদস্য আহসানুল হক টিটুর সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত চাঙ্গা ও শক্তিশালী, তবে দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণে নেই। পুঁজিবাজার শক্তিশালী করার জন্য যা যা করার তাই করা হবে। তিনি বলেন, একটা দেশের অর্থনীতি যতই শক্তিশালী হয়, তার প্রতিফলনটা আমরা দেখতে পাই পুঁজিবাজারে। পৃথিবীর সারাদেশেই এভাবে পুঁজিবাজার আর অর্থনীতি সম্পৃক্ত থাকে। আমাদের দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত চাঙ্গা ও শক্তিশালী। কয়েক দিন আগে আইএমএফ’র সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি। সেখানেও তারা আমাদের গতিশীলতা দেখে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। তিনি আরো বলেন, আমাদের এগিয়ে যাওয়া থমকে যাবে, যদি পুঁজিবাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি। পুঁজিবাজার এখন নিয়ন্ত্রণে নাই আমি বলবো। তবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নাই এটা বলবো না। পুঁজিবাজারে যে সকল সমস্যা আছে তা এক এক করে সমাধান করবো।

এসময় প্রশ্নকারী সংসদ সদস্যকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, সরকার অর্থনৈতিক এলাকায় যেমনিভাবে চিন্তা করে, তেমনি পুঁজিবাজার নিয়েও ততটা যত্নশীল। আমি নিজেও পুঁজিবারের সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের সবাইকে নিয়ে এক দুই দফা মিটিং করেছি, আরো মিটিং করবো। মিটিং করে পুঁজিবাজারকে আর ১০টি দেশে যেভাবে চলে সেইভাবেই চালাবার জন্য চেষ্টা করবো। আমাদের বিচ্যুতিগুলো অবশ্যই দূর করবো।

আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য কোন প্রণোদনা থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজাটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা অবশ্যই থাকবে। তবে কতটা থাকবে সেটা এই মুহুর্তে বলতে পারবো না। তবে পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করার জন্য যা কিছু করার প্রয়োজন তা করা হবে।

সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে : সরকারি দলের সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, অনেকের ধারণা আমাদের ব্যাংককিং নাজুক অবস্থায় আছে। কিন্তু আমাদের ব্যাংককিং খাত এতো খারাপ বলবো না। যদি এতোই খারাপ হতো তাহলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অর্জন এটা হতো না। ব্যাংকিংখাত বাদ দিয়ে অর্থনৈতিক অর্জন হয় না। আমাদের দেশের ব্যাংক ঋণের সুদের হার ১৪-১৫ ভাগ। এটা বিশ্বের কোনো দেশে নেই। প্রধানমন্ত্রী এই সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার কথা বলেছেন। তিনি বুঝে শুনে চিন্তা করেই এ কথা বলেছেন। আমরা কাজ শুরু করেছি, সুদের হার কমাবো, সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসবো।

Bootstrap Image Preview