বগুড়ার ধুনট উপজেলায় শরীর মোটাতাজাকরণ ঔষধ খাইয়ে রতনা খাতুন (১৪) নামে এক বালিকা বধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী শাহাদৎ হোসেনের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রতনা খাতুন উপজেলার চরনাটাবাড়ি গ্রামের গাজিউর রহমানের মেয়ে।
এ দিকে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে শাহাদৎ হোসেন (২২) নামে এক ট্রাকচালককে বুধবার সকাল ৯টার দিকে আটক করেছে পুলিশ। শাহাদৎ হোসেন শেরপুর উপজেলার মহিপুর জামতলা এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার মহিপুর জামতলা এলাকার ট্রাকচালক শাহাদৎ হোসেনের সাথে প্রায় ৩ বছর আগে ধুনট উপজেলার চরনাটাবাড়ি গ্রামের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী রতনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছর পর তাদের দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। অল্প বয়সে বিয়ে ও সন্তান প্রসবের কারণে রতনা খাতুনের শরীর ভগ্নদশায় পরিণত হয়। এতে দাম্পত্য জীবনে অশান্তির সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে স্ত্রীকে শারীরিকভাবে মোটাকরণের ঔষধ সেবনে বাধ্য করে স্বামী।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার শেরপুর শহরের এক ফার্মেসী থেকে স্ত্রীকে মোটাতাজা ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার হারবাল জাতীয় ঔষধ (ট্যাবলেট) কিনে শাহাদৎ হোসেন। এরপর রতনা খাতুনকে সাথে নিয়ে শাহাদৎ হোসেন নন্দিগ্রাম উপজেলার মুরাদপুর গ্রামে নানা জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে বেড়াতে যায়।
সেখানে মঙ্গলবার রাত ৯টায় শাহাদৎ হোসেন জোরপূর্বক রতনা খাতুনকে একটি ট্যাবলেট সেবন করায়। এতে রতনা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই রাত ৩টার দিকে রতনা খাতুন শেরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চরনাটাবাড়ি গ্রামে বাবার বাড়ির দিকে রওনা হয়। পথিমধ্যে বুধবার সকাল ৬টায় ধুনট শহর এলাকায় রতনা খাতুন মারা যায়।
এ বিষয়ে শাহাদৎ হোসেন বলেন, সন্তান প্রসবের পর রতনা খাতুন শারীরিকভাবে রুগ্ন ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকের পরামর্শে শরীর মোটাতাজাকরণের ঔষধ কিনে দিয়েছি। তবে ওই ঔষধ সেবন করে রতনা মারা গেছে কিনা জানা নেই।
ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতার প্রমান পাওয়া গেছে। রতনার মৃতদেহ বাবার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে শাহাদৎ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।