Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ রবিবার, মে ২০২৪ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘এমডিকে ওয়াসার সুপেয় পানির শরবত না খাইয়ে আমরা যাব না’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৫৩ PM
আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৫৩ PM

bdmorning Image Preview


ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার ‘সুপেয় পানি‘ দিয়ে শরবত খাওয়াতে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে হাজির হয়েছেন জুরাইন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের সঙ্গে রয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানি, চিনির প্যাকেট ও লেবু। এসব দিয়ে শরবত বানিয়ে এমডিকে খাওয়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়- গত ২০ এপ্রিল সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানায় পুরান ঢাকার জুরাইনবাসী। এরই অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টায় তারা কারওয়ানবাজারে অবস্থিত ওয়াসা ভবনের ঠিক বিপরীতে অবস্থান নেন তারা।

জুরাইন এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের এলাকায় ওয়াসার পানি ড্রেনের পানির মতো অপরিষ্কার। এটা তো খাওয়া দূরের কথা গন্ধে হাতে নেওয়াই যায় না। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কীভাবে বলেন ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ! তাই আমরা এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়াতে এসেছি। তাকে ওয়াসার সুপেও পানির শরবত না খাইয়ে আমরা আখান থেকে যাব না।

তিনি আরো বলেন, পূর্ব জুরাইনের দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধযুক্ত ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে আমরা জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর একটি অভিযোগ করেছিলাম। সেই অভিযোগে কোনো কাজ হয়নি। এখনো প্রতিদিন ময়লা পানি আসে। আমরা কয়েক বছর ধরে ওয়াসার পানি শুধুমাত্র গোসল, কাপড় ও বাসনকোসন ধোয়ার জন্য ব্যবহার করছি। খাওয়ার জন্য মসজিদের টিউবওয়েলের পানি কিনে খাচ্ছি। প্রতি ১০ লিটার পানির জন্য ২ টাকা দিতে হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কী মনে করে পানিকে শতভাগ সুপেয় বললেন, তা আমাদের বোধগম্য হয়নি। আজ আমরা এসেছি এর সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।

এ ছাড়াও কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা যারা একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে যাই, তাদের অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা ওয়াসা ভবনে গিয়ে এমডির জন্য ওয়াসার বিভিন্ন কলের পানি নিয়ে এসেছি। যদি তার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে শুধু লেবু দিয়ে শরবত তৈরি করে খাওয়াব। তিনি খেয়ে বলবেন, পানি কতটুকু সুপেয়।’

এদিকে জুরাইনবাসীর এমন কর্মসূচিতে ওয়াসার ভবনের গেটে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

প্রসঙ্গগত, গত ১৭ এপ্রিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পক্ষ থেকে ‘ঢাকা ওয়াসা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে ওয়াসায় অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে টিআইবি।

এতে আরও বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সিদ্ধ করে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতি বছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়

Bootstrap Image Preview