Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাড়ির জমি পাচ্ছে গোল্ডেন বুট জয়ী আঁখি

ফারুক হাসান কাহার, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩৮ PM
আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩৮ PM

bdmorning Image Preview


জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের গোল্ডেনবুট জয়ী সেরা খেলোয়ার আঁখি খাতুনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অচিরেই বাড়ি তৈরী করার জন্য সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর শহরের মণিরামপুর গ্রামে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের ৫ শতক জমি বরাদ্দ দিতে যাচ্ছেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে আঁখির পরিবারসহ গোটা এলাকার মানুষ আনন্দে ভাসছে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পাড়কোলা গ্রামের হতদরিদ্র তাঁত শ্রমিক ও আঁখির বাবা আক্তার হোসেন জানান, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া তার মাত্র এক শতক বাড়ির জমির উপর দো-চালা একটি টিনের ঘর জীর্ণ ঘর ছাড়া তার আর কোন সহায় সম্বল নেই। এ জীর্ণ ঘরেই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা নারী ফুটবলার আঁখির জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তার একমাত্র ভাই নাজমুল হোসেন বাবা মাকে নিয়ে এখনও এ জীর্ণ কুটিরে বসবাস করেন। আঁখি বাড়ি এলে বাবা-মায়ের সাথে এ জীর্ণ কুটিরেই অবস্থান করেন। এ দেখে একটি সংস্থা আঁখিকে একটি পাকা ভবন তৈরি করে দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। কিন্তু জমি সংকুলান না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সংস্থাটি ভবন নির্মাণ করে দিতে পারেননি। তাবে তারা আশ্বাস দেন আঁখি জমির ব্যবস্থা করতে পারলে তারা ভবন নির্মাণ করে দিবেন। কোন উপায় অন্ত না দেখে মেয়ের কথা ভেবে তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর জমির জন্য আবেদন করেন।

এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খান বলেন, ফুটবলার আঁখির পরিবারের নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। তার বাবা আক্তার হোসেন ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া মাত্র এক শতক জায়গাতে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তাই বাসস্থানের জায়গা চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরা পৌর এলাকার মনিরামপুর বাজার এলাকায় প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের ৫ শতক জমি আঁখির জন্য নির্ধারণ করেছি। শাহজাদপুর উপজেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিন আকন্দ এ খাসজমিটি দখল করে রেখেছিল। আমরা ইতিমধ্যেই উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ওই জমি দখলমুক্ত করেছি। ভূমি মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হয়ে এটি অনুমোন হয়ে আসলে তাকে এ জমি আনুষ্ঠানিক ভাবে বুঝিয়ে দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ক্রীড়া বান্ধব ব্যক্তি। তিনি কয়েকদিন আগে ক্রিকেটার মেহেদী মিরাজকে বাড়ি করার জন্য জায়গা দিয়েছেন। ফলে আমরাও আশান্বিত যে, খুব দ্রুতই আঁখি এ জমিটি বরাদ্দ পাবে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইফতেখার উদ্দিন শামীম বলেন, গত ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ফুটবলার আঁখির একটি আবেদন আমরা পেয়েছি। জমি পাওয়ার অধিকার তার আছে। সবেমাত্র আবেদনটা করেছে, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে জমি আছে দেয়া যাবে।

আঁখির বড় ভাই নাজমুল হোসেন বলেন, খুবই কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। বাড়িতে থাকার মাত্র একটি জীর্ণ ঘর। সেখানেই খুব কষ্ট করে মা বাবা থাকে। আমি থাকি এক চাচার ঘরে। আঁখি বাড়ি এলে মায়ের সাথে খুব কষ্ট করে ঘুমায়। তার সাফল্যে আমি গর্বিত। সে শুধু আমার নয় পুরো শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জবাসীর গর্ব। তাই সে বাড়ি পাওয়ায় আমি খুবই আনিন্দিত।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবলে শাহজাদপুর ইব্রাহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হয়ে খেলে উঠে আসে আঁখি। ২০১৫ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক আসে তার। এর আগে তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম খেলে আঁখি। ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এ টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে আঁখি খাতুন গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। তারপর থেকে তিনি একের পর এক দেশের জন্য সাফল্য বয়ে এনেছেন। 

Bootstrap Image Preview