Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৩ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

নুসরাত হত্যা: ওসিকে রক্ষায় এসপির চিঠি!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:০০ PM
আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:০০ PM

bdmorning Image Preview


মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) যৌন নিপীড়নের পর কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যে সেই ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘নাটক’ ও পরে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাকে ‘আত্মহত্যায়’ রূপ দিতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিলেন ওই ওসি।

দুটি ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাসহ তার সহযোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

সেই ওসির পর এবার জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের পরিবারকে দোষারোপ করলেন। এসপির অভিযোগ, নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মামলা করতে পরিবার ‘কালক্ষেপণ’ করেছে। ঘটনার পর পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো চিঠিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।

পুলিশ সুপারের চিঠিতে বলা হয়, ঘটনার দিন নুসরাত মাদ্রাসায় যান। এরপর তার বসার স্থানে ফাইলপত্র রেখে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদের ওপরে বাথরুমের কাছে যান। কিছুক্ষণ পর গায়ে আগুন লাগা অবস্থায় সিঁড়ি দিয়ে চিৎকার করতে করতে নেমে আসেন। তখন কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও মাদ্রাসার কর্মচারীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তারা মামলা করতে কালক্ষেপণ করে। পুলিশ নুসরাতের চাচাকে বাদী করে মামলা করতে গেলে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান আপত্তি জানান। তিনি দুবার এজাহার বদল করেন।

এ বিষয়ে নুসরাতের পরিবার জানায়, ওসিকে রক্ষায় এমন চিঠি দেয়া হয়েছে। পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে প্রথম থেকেই পুলিশ ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি মামলার এজাহার নিয়েও পুলিশ কূটচাল চেলেছে।

নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনাটি এমনভাবে বলা হয়েছে যাতে মনে হচ্ছে, নুসরাত নিজের ইচ্ছাতেই ভবনের ওপরে যান। অথচ তাকে পরিকল্পনা করে ডেকে নেয়া হয়। এরপর হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার কোনো কথাই উল্লেখ করা হয়নি।

নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান বলেন, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে ওসি বলে আসছেন, শ্লীলতাহানির অভিযোগ সাজানো। এমনকি ৬ এপ্রিল তার বোনকে হত্যাচেষ্টার ঘণ্টা দেড়েক আগেও মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফছারউদ্দীন মামলা তুলে নিতে চাপ দেন।

হাসান বলেন, হত্যাচেষ্টার ৩০ ঘণ্টা পর ওসি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, এটা হত্যাচেষ্টা না আত্মহত্যার চেষ্টা, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। সর্বশেষ ৮ এপ্রিল তিনি যে মামলা সাজিয়ে পাঠিয়েছেন, সেখানেও পুলিশ তথ্য গোপনের চেষ্টা করেছে। পরিবারের দাবির মুখে শেষ পর্যন্ত মামলার এজাহার বদলানো হয়েছে। মূলত ওসিকে রক্ষায় এসপি চিঠি দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এসপি এস এম জাহাঙ্গীর আলম কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

সোনাগাজীর সাবেক ওসির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, দায়িত্বশীল চেয়ারে থেকে এমনটি করার সুযোগ নেই।

এদিকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দফতর।

বুধবার এই কমিটির প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা। তবে কমিটি কবে প্রতিবেদন জমা দেবে, সে তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

জানতে চাইলে কমিটির প্রধান ও পুলিশ সদর দফতরের উপমহাপরিদর্শক (মিডিয়া) রুহুল আমিন বলেন, পুলিশের যা যা করার কথা ছিল, সেটা ঠিকমতো করেছে কি না, সেটা দেখাই কমিটির উদ্দেশ্য।

ফেনীর এসপির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশ ও নুসরাতের পরিবার দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলবে কমিটি।

এরআগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে রাফিকে নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে দু’জনকে থানায় ডেকে নেন সেই ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করার সময় নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

ভিডিও প্রকাশের পরই ওসিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান নারীনেত্রী, মানবাধিকারকর্মী ও স্থানীয়রা।

পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, এভাবে বক্তব্য ভিডিও করা অপরাধের মধ্যে পড়ে। অভিযোগ করতে আসা কারোর বক্তব্য দেয়ার দৃশ্য ভিডিও করলে তার (ওসি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে।

এর আগে ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর ছাগলনাইয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে। ঘুষ কেলেঙ্কারি, স্বর্ণ চুরি, মামলার আলামত চুরি করে বিক্রি করে দেয়া, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া, টোকেন দিয়ে নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিকশা থেকে মাসোয়ারা আদায়, ভুয়া মামলা দিয়ে অর্থ আদায়, নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে সেখান থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। তারও আগে ফেনী মডেল থানা থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও জামায়াতের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে (১৮) যৌন নিপীড়নের পর কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় ইতিমধ্যে সেই ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সোনাগাজী মডেল থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

যৌন নিপীড়নের ঘটনাকে ‘নাটক’ ও পরে অগ্নিদগ্ধের ঘটনাকে ‘আত্মহত্যায়’ রূপ দিতে মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিলেন ওই ওসি।

দুটি ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলাসহ তার সহযোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।

সেই ওসির পর এবার জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহানের পরিবারকে দোষারোপ করলেন। এসপির অভিযোগ, নুসরাতকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় মামলা করতে পরিবার ‘কালক্ষেপণ’ করেছে। ঘটনার পর পুলিশ সদর দফতরে পাঠানো চিঠিতে তিনি এই অভিযোগ করেন।

পুলিশ সুপারের চিঠিতে বলা হয়, ঘটনার দিন নুসরাত মাদ্রাসায় যান। এরপর তার বসার স্থানে ফাইলপত্র রেখে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদের ওপরে বাথরুমের কাছে যান। কিছুক্ষণ পর গায়ে আগুন লাগা অবস্থায় সিঁড়ি দিয়ে চিৎকার করতে করতে নেমে আসেন। তখন কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ও মাদ্রাসার কর্মচারীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। ঘটনার পর পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবারকে বারবার অনুরোধ করা হলেও তারা মামলা করতে কালক্ষেপণ করে। পুলিশ নুসরাতের চাচাকে বাদী করে মামলা করতে গেলে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান আপত্তি জানান। তিনি দুবার এজাহার বদল করেন।

এ বিষয়ে নুসরাতের পরিবার জানায়, ওসিকে রক্ষায় এমন চিঠি দেয়া হয়েছে। পুড়িয়ে মারার ঘটনাকে প্রথম থেকেই পুলিশ ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছে। এমনকি মামলার এজাহার নিয়েও পুলিশ কূটচাল চেলেছে।

নুসরাতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনাটি এমনভাবে বলা হয়েছে যাতে মনে হচ্ছে, নুসরাত নিজের ইচ্ছাতেই ভবনের ওপরে যান। অথচ তাকে পরিকল্পনা করে ডেকে নেয়া হয়। এরপর হাত-পা বেঁধে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার কোনো কথাই উল্লেখ করা হয়নি।

নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান বলেন, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করার পর থেকে ওসি বলে আসছেন, শ্লীলতাহানির অভিযোগ সাজানো। এমনকি ৬ এপ্রিল তার বোনকে হত্যাচেষ্টার ঘণ্টা দেড়েক আগেও মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফছারউদ্দীন মামলা তুলে নিতে চাপ দেন।

হাসান বলেন, হত্যাচেষ্টার ৩০ ঘণ্টা পর ওসি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, এটা হত্যাচেষ্টা না আত্মহত্যার চেষ্টা, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। সর্বশেষ ৮ এপ্রিল তিনি যে মামলা সাজিয়ে পাঠিয়েছেন, সেখানেও পুলিশ তথ্য গোপনের চেষ্টা করেছে। পরিবারের দাবির মুখে শেষ পর্যন্ত মামলার এজাহার বদলানো হয়েছে। মূলত ওসিকে রক্ষায় এসপি চিঠি দিয়েছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এসপি এস এম জাহাঙ্গীর আলম কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

সোনাগাজীর সাবেক ওসির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি গোলাম ফারুক বলেন, দায়িত্বশীল চেয়ারে থেকে এমনটি করার সুযোগ নেই।

এদিকে পুড়িয়ে মারার ঘটনায় পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দফতর।

বুধবার এই কমিটির প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা। তবে কমিটি কবে প্রতিবেদন জমা দেবে, সে তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।

জানতে চাইলে কমিটির প্রধান ও পুলিশ সদর দফতরের উপমহাপরিদর্শক (মিডিয়া) রুহুল আমিন বলেন, পুলিশের যা যা করার কথা ছিল, সেটা ঠিকমতো করেছে কি না, সেটা দেখাই কমিটির উদ্দেশ্য।

ফেনীর এসপির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সেটা খতিয়ে দেখা হবে। পুলিশ ও নুসরাতের পরিবার দুই পক্ষের সঙ্গেই কথা বলবে কমিটি।

এরআগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে রাফিকে নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে দু’জনকে থানায় ডেকে নেন সেই ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওসি নিয়ম ভেঙে জেরা করার সময় নুসরাতের বক্তব্য ভিডিও করেন। মৌখিক অভিযোগ নেয়ার সময় দুই পুরুষের কণ্ঠ শোনা গেলেও সেখানে নুসরাত ছাড়া অন্য কোনো নারী বা তার আইনজীবী ছিলেন না। ভিডিওটি প্রকাশ হলে অধ্যক্ষ ও তার সহযোগীদের সঙ্গে ওসির সখ্যের বিষয়টি স্পষ্ট হয়।

ভিডিও প্রকাশের পরই ওসিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান নারীনেত্রী, মানবাধিকারকর্মী ও স্থানীয়রা।

পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্তা জানিয়েছেন, এভাবে বক্তব্য ভিডিও করা অপরাধের মধ্যে পড়ে। অভিযোগ করতে আসা কারোর বক্তব্য দেয়ার দৃশ্য ভিডিও করলে তার (ওসি) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে।

এর আগে ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর ছাগলনাইয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে। ঘুষ কেলেঙ্কারি, স্বর্ণ চুরি, মামলার আলামত চুরি করে বিক্রি করে দেয়া, সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া, টোকেন দিয়ে নম্বরবিহীন সিএনজি অটোরিকশা থেকে মাসোয়ারা আদায়, ভুয়া মামলা দিয়ে অর্থ আদায়, নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর হামলা, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে সেখান থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। তারও আগে ফেনী মডেল থানা থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি ও জামায়াতের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল।

Bootstrap Image Preview