শিক্ষিত জনগোষ্ঠীই দেশের ভাগ্য বদলে দিবে, তাই সরকারের উচিত শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করা। এখন জিডিপি'র ২-৩ শতাংশ বিনিয়োগ করা হচ্ছে অথচ বঙ্গবন্ধু তখনই বলে গেছেন জিডিপি'র মিনিমাম ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দেওয়া দরকার বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে 'লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ইন এ ডিজিটাল ইরা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।
সেমিনারে ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ভাগ্য বদলে দিচ্ছে কৃষকের সন্তানেরা। আমিও একজন কৃষকের সন্তান। আমি কখনো শহর দেখিনি। আমি যদি এখানে আসতে পারি তোমরা কেন পারবে না।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের মধ্যে সাফল্যের বুভুক্ষা থাকতে হবে। লেগে থাকো, হেরে যেও না। যে তোমাকে কষ্ট দিয়েছে তার কথা মনে রেখো না, কষ্টটা মনে রেখো। এটাই তোমাকে সফল করবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে জন্মালেই দেশ আপন হয় না। দেশকে ভালোবাসতে হয়। এটাই আমার শক্তি। প্রকৃতি থেকে শিখতে হবে। নদী তার জল পান করে না, ফুল তার গন্ধ নেয় না। এভাবেই পরার্থপর অর্থনীতি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, রবীন্দ্রনাথ একজন ভালো অর্থনীতিবিদও ছিলেন। তিনি যখন পূর্ব বাংলায় জমিদারি পরিচালনা করছিলেন। তখন কাছ থেকে প্রজাদের কষ্ট দেখে তাদের জন্য সমবায় সমিতি করেছিলেন। পাবনায় সিন্ধু থেকে গাভী এনে খামার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'সবার জন্য বিজলী বাতি চাই' এ কথার মাধ্যমেই বোঝা যায় তিনি সবার জন্য সাম্যের চিন্তা করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালে দেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৭৯ ডলার। আর আজ ১৯০০ ডলার। ২০৪১ সালে ১৪ হাজার ডলার মাথাপিছু আয়ের স্বপ্ন দেখি। ৭২ সালে দেশে ১ কোটি টন চাল উৎপাদিত হত। গত বছর ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টন চাল উৎপাদন করেছে কৃষকরা। বিভিন্ন গবেষণায় প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির হারের দেশের তালিকায় সারাবিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশকে তৃতীয় অবস্থানে রাখছে। এ অবস্থান এ অর্থবছরেই প্রথম হবে।
নেতৃত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, একমাত্র নেতৃত্বই পারে দেশটাকে এগিয়ে নিতে। সবক্ষেত্রেই সু-নেতৃত্ব চাই। তোমার সমস্ত কাজ যদি কারো মনে আশা জাগায়, স্বপ্ন দেখায় তাহলেই তুমি নেতা। তোমাকে চ্যালেঞ্জের পুকুরে ছুড়ে ফেলে দিলে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তাহলেই যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।
অর্থনীতি বিভাগের আয়োজনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন উর রশিদ আসকারী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপ উপাচার্য অধ্যাপক মো: শাহিনুর রহমান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিম তোহা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, অর্থনীতি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক আব্দুল মুঈদ।
সেমিনারে বিভাগের শিক্ষক মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন, অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের সভাপতি এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।