গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রতিদিন প্রায় ৪/৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না বলে অভিযোগ করেছেন পার্ক কর্তৃপক্ষ। পার্ক কর্তৃপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো তাদেরকে দোষারোপ করছেন পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে পার্কের বিভিন্ন প্রজাতির পশু-পাখির পরিচর্যা এবং বেষ্টনীগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করতে ব্যাঘাত ঘটছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে বাঘ, সিংহ, হাতি, ভাল্লুক, জিরাফ, জেব্রা, হরিণ, কুমির, সাপ এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু রয়েছে। এসব জীবজন্তু ও পশু-পাখির জন্য তৈরী করা হয়েছে বেষ্টনী। আর পশু-পাখিদের গোসল ও বেষ্টনীগুলো পরিস্কারের জন্য আলো ও পানির প্রয়োজন অনেক বেশী। এসব পরিচর্যার কাজ করতে পার্কে বিদ্যুৎ থাকাটা খুবই জরুরী। কিন্তু পার্কে সময়মতো বিদ্যুৎ থাকে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রতিদিন প্রায় ৪/৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় পশু-পাখিদের পরিচর্যা ও বেষ্টনীগুলো পরিস্কার করতে ব্যাঘাত ঘটছে।
অপরদিকে, পার্কের অফিসের দাফতরিক কাজের জন্যও সবসময় বিদ্যুৎ থাকাটা খুবই জরুরী। এ বিষয়ে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে একাধিকবার বিষয়টি জানালেও কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। পার্কে থাকা পশু-পাখিদের পরিচর্যায় ব্যাঘাত ঘটলে যে কোন সময় পশু-পাখি মারা যেতে পারে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে সরকারি সম্পদ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ছুটির দিন ছাড়া প্রায় প্রতিদিন দেশ বিদেশের শতশত পর্যটক ঘুরতে পরিদর্শন করতে আসে। তারা এখানে পিকনিকসহ বিভিন্ন প্রকার অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে থাকে। তাই সার্বক্ষণিক এখানে বিদ্যুৎ থাকাটা জরুরী।
পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং সহকারী বন সংরক্ষক তবিবুর রহমান জানান, পার্ক সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে। মঙ্গলবার পার্কের পশু-পাখির পরিচর্যা, গোসল এবং বেষ্টনীগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। দীর্ঘদিন যাবৎ পার্কে মঙ্গলবার ছাড়াও সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিন ৪/৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। এতে পার্কের পশু-পাখিদের পরিচর্যা করতে ব্যাঘাত ঘটছে।
গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহা-ব্যবস্থাপককে (জেনারেল ম্যানেজার) বিষয়টি মৌখিকভাবে একাধিকবার জানানো হলেও তিনি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।
গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মহা-ব্যবস্থাপক (জেনারেল ম্যানেজার) শাহ্ নেওয়াজ বলেন, এ ধরনের কথা ঠিক না। বনবিভাগ বনের একটি গাছের ডালও কাটতে দেয় না। যার ফলে অনেক সময় ঝড়-বৃষ্টিতে বৈদ্যুতিক তারের উপর গাছের ডাল পড়ে তার ছিড়ে যায় এবং বিদ্যুতের ক্ষতি হয়। এ কারণে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হয়।
এ ছাড়া অনেক সময় নতুন লাইন নির্মাণ করতে গেলে বিদ্যুৎ বন্ধ রেখে কাজ করতে হয়। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে সবসময় বিদ্যুৎ থাকে বলে দাবি করেন তিনি।
উল্টো অভিযোগ করে পল্লী বিদ্যুতের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) জানান, সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতার কারণে ওই এলাকার বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অনেক ভোগান্তিতে থাকতে হচ্ছে। তাদের কারণে প্রায় ২০/২২ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ পাচ্ছে না।