Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

শুরু হচ্ছে নারীদের ‘ওয়াও ঢাকা–২০১৯ ফেস্টিভ্যাল’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:৫৪ PM
আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:৫৪ PM

bdmorning Image Preview


নারী ও কিশোরীদের সফলতা আর অর্জনগুলো উদযাপনের এক উৎসব। একইসঙ্গে বিশ্বজুড়ে তারা যে ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তার ওপর আলোকপাতের নানা আয়োজন। যেখানে বাচ্চাদেরও শেখানো হবে জানানো হবে নারী বা পুরুষ নয় সবাই হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করলেই এগিয়ে যাবে সমাজ। এমনই আয়োজন থাকবে ওয়াও আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যা্লে।

যুক্তরাজ্যের ওয়াও ফাউন্ডেশনের অংশীদারিত্বে ব্রিটিশ কাউন্সিল এবার রাজধানী ঢাকাতে প্রথমবারের মতো আয়োজন করছে ‘ওয়াও-উইমেন অব দ্য ওয়ার্ল্ড ফেস্টিভ্যাল’। যেটিকে ‘ওয়াও ঢাকা ২০১৯ ফেস্টিভ্যাল’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হচ্ছে। আগামী ৫ ও ৬ এপ্রিল বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে দুই দিনব্যাপী এ উৎসব।

ব্রিটিশ কাউন্সিল মিলনায়তনে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজনের বিস্তারিত জানায় সংস্থাটি। এতে সম্মেলনের প্যানেল আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর এ্যান্ড্রিউ নিউটন, হেড অব আর্টস নাহিন ইদ্রিস, মঙ্গলদীপের প্রতিষ্ঠাতা সারা যাকের, লিপিং বাউন্ডারিজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাগুফে হোসেন এবং বহ্নিশিখার প্রতিষ্ঠাতা তাশাফি হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল আলোচকরা ওয়াও ফেস্টিভ্যাল নিয়ে বিস্তারিত জানান।

লিঙ্গ সমতার অগ্রগতিতে এ ফেস্টিভ্যালের গুরুত্ব নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর এ্যান্ড্রিউ নিউটন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় আর্টস প্রোগ্রাম পোর্টফোলিওর অধীনে নারী ও কিশোরীদের ক্ষমতায়নে আমাদের কাজের অগ্রগতির ক্ষেত্রে ওয়াও ফেস্টিভ্যাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটিশ কাউন্সিলে আমরা বিশ্বাস করি, অন্তর্ভুক্তিমূলক, উদার ও সম্ভাবনাময় সমাজ বিনির্মাণের পাশাপাশি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর লক্ষ্য ‘জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন’ অর্জনের ক্ষেত্রে জেন্ডার সমতা অর্জন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সাংস্কৃতিক বোঝাপড়া শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের চর্চা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করা এবং স্থানীয় পরিপ্রেক্ষিতে তা বাস্তবায়নের প্রভাবশালী মাধ্যম ওয়াও ফেস্টিভ্যাল। বিশ্বজুড়ে নারী ও কিশোরীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে, তাদের জন্য সুযোগ তৈরিতে এবং দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে তাদের সম্ভাবনা অর্জনে এবং জীবন পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রভাব তৈরিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করবে ওয়াও ফেস্টিভ্যাল।

ওয়াও ঢাকার লক্ষ্যের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের হেড অব আর্টস নাহিন ইদ্রিস বলেন, ওয়াও ঢাকার অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতীয় প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমাদের প্রত্যাশা, এ শহর এবং এখানে যারা প্রতিদিন বাস করেন এবং কাজ করেন তাদের ওপর গুরুত্বারোপ করা। পাশাপাশি, ফেস্টিভ্যালে দর্শনার্থী বক্তা, প্যানেল আলোচক ও নারীদের অনুপ্রাণিত ও উৎসাহী করা হবে। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে, নারী ও কিশোরীদের অর্জনগুলো উদযাপনের মাধ্যমে সকল মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং নারীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনের ক্ষেত্রে যে প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয়েছেন এবং সফলভাবে সে সমস্যা সমাধান করেছেন, সহস্রাধিক নারীর সে গল্প তুলে ধরার মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করা।

সারা যাকের বলেন, ওয়াও ঢাকার সঙ্গে কাজের সুবাদে আমি লন্ডনেরও একই উৎসবে গিয়েছি। আমার কাছে মনে হয়েছে সত্যিই এটা একটা বিরাট উৎসব। নারীরা কষ্ট করে কিভাবে একটা পর্যায়ে এসেছে, কিভাবে বাধা অতিক্রম করেছে সেই গল্পগুলো বলা হয়েছে। তবে উৎসবটি শুধু নারীদের জন্য নয় নারী পুরুষ সকলের জন্য। নারী পুরুষ যে আসলে সমান ও একসঙ্গে কাজ করলে সমাজ এগিয়ে যায় আমরা সেটা এখানে একটি বিশেষ আয়োজনে অনুর্ধ ১০ বছরের ছেলে মেয়েদের জানাব।

ওয়াও ঢাকা ফেস্টিভ্যালে জনসাধারণের সমষ্টিগত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এবং তাদের দৈনন্দিন দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপে অংশ নেবে। উৎসবে সামাজিক প্রথা, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, পুরুষ ও পুরুষত্ব এবং নারীবাদের মতো বিষয়ের ওপর প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সমাজের বিভিন্ন স্তরের নারীদের বাস্তবতা, নিজেদের উন্নতির পথে তারা যে বাধা ও প্রতিকূলতার সম্মুখীন হয় এ বিষয়ের ওপর বিভিন্ন কর্মশালাও অনুষ্ঠিত হবে এই আয়োজনে। এছাড়াও ফেস্টিভ্যালে ২০টি বিষয়ের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা, গল্প বলাসহ নারীদলের নানা পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হবে। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সরাসরি প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ পাবেন উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা।

এছাড়াও উৎসবে লিঙ্গ বিষয় নিয়ে তথ্য, নারী উদ্যোক্তাদের কাজের প্রদর্শনী ও তাদের পণ্য বিক্রির জন্য নির্বাচিত স্টল থাকবে। পাশাপাশি, দর্শকদের জন্য চিত্র প্রদর্শনী, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, পারফর্মিং আর্টস ও থিয়েটার প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে।

ওয়াও ফেস্টিভ্যাল নারীদের জন্য বিশ্বের সর্ববৃহৎ উৎসব। ২০১০ সালে লন্ডনে এটি যাত্রা শুরু করে। এখন এটি একটি বৈশ্বিক উৎসব যা পাঁচটি মহাদেশে অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ লাখের বেশি নারী ক্রমবর্ধমান ওয়াও মুভমেন্টের অংশ হচ্ছেন যেখানে পুরুষ ও কিশোররাও লিঙ্গ ভারসাম্যতাপূর্ণ বিশ্বের অংশ হিসেবে উপকৃত হবে।

গত বছর ব্রিটিশ কাউন্সিল রংপুর, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে ওয়াও চ্যাপ্টারসের কয়েকটি অনুষ্ঠান আয়োজন করে। দেশের পাঁচটি বিভাগীয় শহরে ওয়াও চ্যাপ্টারস আয়োজনের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওয়াও ঢাকা ফেস্টিভ্যাল।

সবার জন্য উন্মুক্ত এ উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য ফেস্টিভ্যালের পূর্বেই নিবন্ধন করতে হবে। বিস্তারিত জানতে ও নিবন্ধন করতে ইন্টারনেটে https://ww w.britishcouncil.org.bd/en/ wow-dhaka-2019 এই ঠিকানায় খোঁজ নিতে হবে।

Bootstrap Image Preview