নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গত রবিবার রাতে স্বামীকে আটকে রেখে ছয় সন্তানের জননীকে (৪০) গণধর্ষণের ঘটনায় এজাহারনামায় উল্লেখ করা আরো তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থেকে আরমান, রুবেল ও রায়হান নামের ওই তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে পুলিশ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। আগের গ্রেফতারকৃত ২ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
সুবর্ণচর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান ভোটকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন ছয় সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠে। এদিকে সোমবার গ্রেফতারকৃত আবুল বাসার ও ইউসুফ মাঝির সাতদিন করে রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী জেলা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আমলী আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালতের বিচারক মাসফিকুল হক আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়ে আগামীকাল বুধবার রিমান্ডের শুনানির দিন ধার্য করেন।
এদিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ওই নারীকে দেখতে যান। পরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে সুষ্ঠ বিচারের দাবিতে স্বারকলিপি দেন। অন্যদিকে, হাসপাতালে ভিকটিমের বিভিন্ন পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপক জ্যোতি খীষা জানান, মামলার প্রত্যেক আসামিকে গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। এ জন্য সকল প্রকার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে মঙ্গলবার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নির্যাতিতার সকল প্রকার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয় বলে জানান নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সৈয়দ মহিউদ্দিন আবদুল আজিম।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মালেকা বানু জানান, বিচার না পাওয়ার কারণেই এসব ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করেন এবং ওই নারীর পরিবারের নিরাপত্তা ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত রববার রাতে স্থানীয় সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বার বাজার থেকে স্বামীর মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি ফেরার পথে ইউসুফ মাঝি ও বেচু মাঝির নেতৃত্বে ১০-১২ জন নির্যাতিতার স্বামীর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে মারধর করে। পরে তার স্বামীকে এক পাশে আটকে রেখে তাকে বেচু মাঝি, ফজলু ও আবুল বাসার পাশের কলা বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই রাতে তাদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান। পরের দিন নির্যাতিতার স্বামী ৮ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো চারজনকেসহ মোট ১২ জনকে আসামি করে চরজব্বার থানায় মামলা দায়ের করেন।