বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের তাদের দলের ভুল রাজনীতির ঘোরপ্যাঁচে না পড়ে তাদের এলাকার মানুষের কথা বলার জন্য হলেও সপথ নিয়ে সংসদে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ।
আজ মঙ্গলবার মোহম্মদপুর টাউন হল শহীদ পার্ক মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তরের অন্তর্গত মোহম্মদপুর থানা আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৭০ এর নির্বাচনের আগে জাতির পিতার মাধ্যমে এদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের। তারপর জাতির পিতাকে হত্যার মাধ্যমে সে স্বপ্নকে মাটিচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সেই অবস্থা থেকে দেশের মানুষ ২০০৮ সালে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবার সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছেন।
পদ্মা সেতু নিয়ে তিনি বলেন, পদ্মা সেতু করার সময় বিশ্বব্যাংক যপখন গড়িমসি করেছেন। আজকে তারাই বলছেন বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর রোল মডেল। আজকে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি মর্যাদাশালী দেশ। দশ বছরে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা দেখে বিশ্ববাসী বারবার অবাক হচ্ছেন। বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থেকেও দেশকে পিছিয়ে দিতে চেয়েছে।
বিএনপির আজকের আন্দোলনের মূল কি? প্রশ্ন করে তিনি বলেন, তারেক রহমানকে ও খালেদাকে মুক্ত করাই বিএনপির মূল আন্দোলন।খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। আপনারা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করুন। বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়ার দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের। বেগম জিয়া বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ভালো আছেন। কিন্তু বিএনপির কিছু সিনিয়র নেতা তাতে সন্তুষ্ট নয়। আসলে তারা চায় না খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে রাজনীতির মাঠে ফিরে আসুক। বিএনপির অতীতের কর্মকান্ডের কারণে দেশ অনেক পিছিয়ে ছিল। আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।
হানিফ বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জনের মাধ্যমে তারা ভোটের রাজনীতি ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। আজকে শুধুমাত্র মিডিয়ার কল্যাণে আপনারা টিকে আছেন। বিএনপি জামায়াতের কোনো রাজনীতি নেই। বিএনপি জামায়াতের সাথে আরো কিছু দোসর যুক্ত হয়ে আজ দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, 'প্রত্যেকটি জেব্রা ক্রশিংয়ে পুশ লাইট লাগানো থাকবে। আজকে সময় এসেছে ট্রাফিক আইনকে শ্রদ্ধা করার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাদের কষ্ট কীভাবে লাঘব করা যায় সে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যেকটি ওভারব্রীজে আমরা এক্সাভেটর লাগিয়ে দিবো। কিন্তু এসব ব্যবহারের দায়িত্ব আপনাদের।'
মেয়র বলেন, আপনাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আর যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা যাবে না। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলতে হবে। রাজধানীকে সুন্দর করার জন্য ও সুরক্ষার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে।
এ সময় সভায় প্রধানবক্তা হিসেবে উপস্থিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমাদের দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল, বিদ্যুতে ঘাটতি ছিল। এসব ঘাটতি কার মাধ্যমে পুরণ হয়েছে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে। আমি যেখানে যাই সেখানে একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হয় আর সেটা হল শেখ হাসিনার ম্যাজিক কি?। কেবলমাত্র শেখ হাসিনাই পারে বাংলাদেশকে বদলে দিতে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালে শেখ হাসিনা কথা দিয়েছিলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার। আজ তা বাস্তবায়নের পথে। শেখ হাসিনা কথা দিয়েছিলেন এদেশকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসমুক্ত করার। তার ডাকে এদেশের মানুষ সাড়া দিয়েছিলেন বলেই আজ তা বাস্তবায়ন হয়েছে। আবার তিনি ডাক দিয়েছেন দেশকে মাদকমুক্ত করার। আমরা যদি তা বাস্তবায়ন করতে না পারি তাহলে আমাদের ৪০ সালের স্বপ্ন স্বপনই থেকে যাবে। আপনারা যেভাবে জঙ্গি দমনে সহায়তা করেছেন মাদকের বিরুদ্ধে সেই একই রকম শযোগিতার মাধ্যমে দেশকে মাদকমুক্ত করতে পারবো।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলীন, আজকে আমাদের দেশের জিডিপির ৮.১৩। এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য। সারা বাংলাদেশ আজ এটাই বিশ্বাস করে বাংলাদেশকে যদি এগিয়ে নিতে হয় তাহলে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার হাত ধরেই বাংলাদেশ দুর্বার গতিত্র সামনে এগিয়ে যাবে।