দেশের সব বিভাগীয় শহরে অটিজম পরিচর্যা কেন্দ্র করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পর্যায়ক্রমে দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে বৃহৎ পরিসরে এ ধরনের পরিচর্যা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এসব কেন্দ্রে তাদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা, খেলাধুলাসহ সকল সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দ্বাদশ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্যায়ক্রমিকভাবে যখন সম্ভব হয় আমরা প্রতি জেলায় করে দেব। কারণ অনেক বাবা-মা আছেন, তাদের ভেতরে একটা দুশ্চিন্তা থাকে যে তারা না থাকলে এই বাচ্চাদের কে দেখবে। যাদের ভাই-বোন আছে, যারা ভালো সহানুভূতিশীল তারা তো দেখে। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তো তা হয় না। বাবা-মার সেই দুশ্চিন্তা দূর করার জন্যই আমরা এই বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা পরিচর্যা কেন্দ্র করে দেব। আমরা যে ট্রাস্টফান্ড করে দিয়েছি তার মাধ্যমে সহায়তা দেব।'
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হওয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সন্তান প্রতিবন্ধী হলে অযথা মাকে দোষারোপ না করতেও অনুরোধ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, 'একটা শিশু যখন জন্ম নেয় সে যে অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী হবে এটা তো ওভাবে জানা থাকে না। শিশুটা যখন জন্ম নেয় মাও দায়ী থাকে না, বাবাও দায়ী থাকে না। কেউই কিন্তু দায়ী থাকে না। শিশুটা সাধারণ মানুষের মতো হয়নি এটা আল্লাহতালার ইচ্ছা। অনেক সময় দেখি মায়ের ওপর দোষারোপ করা হয়। আশা করি ভবিষ্যতে মাকে আর কেউ অযথা দোষারোপ করবেন না। এটা মায়ের জন্য কষ্টের।'
তিনি বলেন, 'আমি এটুকুই চাইব, এই অবহেলিত জনগোষ্ঠী যেন আর অবহেলার শিকার না হয়। তারা যেন আমাদের সমাজে তাদের যোগ্য স্থান পায়। তারা আমাদেরই সন্তান, আমাদেরই ভাই, বোন। সে কথাটা মনে করে সবাই অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধীদের সাথে নিয়ে চলবেন সেটাই আমি চাচ্ছি।'
অটিস্টিক এবং প্রতিবন্ধীরাও যে সাধারণ মানুষের মতো সবকিছু করতে পারে সে প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা চাই যারা অটিস্টিক বা প্রতিবন্ধী তারা যেন সমাজের বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়। তাদের যেন কেউ বোঝা মনে না করে । তাদের মাঝে কিন্তু অনেক ট্যালেন্ট আছে।'
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকার সমাজকল্যাণ পরিদপ্তরের মাধ্যমে দেশের ৪৭টি সাধারণ বিদ্যালয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সমন্বিত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। সে সময়ের বাস্তবতায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মূলধারার বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রম ছিল প্রগতিশীল, যুগোপযোগী ও কার্যকর একটি পদক্ষেপ।