Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৫ রবিবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশেনের জন্য ভর্তি হয়ে পেটে মিলল পেরেক!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৩৯ PM
আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


চট্টগ্রামে ব্লু-ভিউ হোটেলের শেফ শহিদুল ইসলাম অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশেনের জন্য ভর্তি হয় বেসরকারি সিএসসিআর হাসপাতালে তারপর তার পেটের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেটে মিলেছে আস্ত একটি পেরেক! তারপরই এ ঘটনায় ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, শেফ শহিদুল ইসলাম গত শনিবার (৩০ মার্চ) পেটের ব্যথা নিয়ে বেসরকারি সিএসসিআর হাসপাতালে যান। হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ সানাউল্লাহ শেলী পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে শহিদুলের অ্যাপেন্ডিসাইটিস শনাক্ত করেন এবং অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। সে লক্ষ্যে শহিদুলকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। কিন্তু টাকা পরিশোধ না করায় রোগীকে অপারেশন থিয়েটার থেকে ফেরত পাঠান ডা. সানাউল্লাহ শেলী।

শহিদুল ইসলাম জানান, গত শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে পেটে ব্যথা নিয়ে তিনি সিএসসিআর হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ সানাউল্লাহ শেলী পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশনের সিদ্ধান্ত দেন।

এরপর একই হাসপাতালের সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আহসানুল আবেদীনের কাছে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর প্রমাণ মেলে শহিদুল ইসলামের পেটে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথা নয়, তার পেটে রয়েছে আস্ত একটি পেরেক! বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

গতকাল রোববার (৩১ মার্চ) অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গেলে নার্সরা জানান, বিল অগ্রিম পরিশোধ ছাড়া ডা. শেলী অপারেশন করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বিষয়টি নিয়ে শহিদুল ইসলামের কর্মস্থল রেডিসন ব্লু-ভিউ হোটেলের সঙ্গে কথা বলেন তার স্বজনরা। রেডিসন কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, তাদের যে কোনো কর্মকর্তার চিকিৎসা বিল পরিশোধ করা হয় চিকিৎসা-পরবর্তী সময়ে। এ বিষয়ে রেডিসন ও সিএসসিআর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তিও রয়েছে।

জানা যায়, ডা. সানাউল্লাহ শেলী অপারেশন করতে অপারগতা প্রকাশ করায় রেডিসন ব্লু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চিকিৎসক পরিবর্তন করে সিএসসিআর কর্তৃপক্ষ। এরপর শহিদুল ইসলামের চিকিৎসা শুরু করেন সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আহসানুল আবেদীন। রোগীর সঙ্গে কথা বলার পর অ্যাপেন্ডেসাইটিস নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়। তিনি শহিদুল ইসলামকে এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। এক্স-রেতে তার পেটে একটি পেরেকের উপস্থিতি ধরা পড়ে। তবে আরও নিশ্চিত হতে বিভিন্ন মেশিনে তিনবার এক্স-রে করা হলে একই চিত্র ধরা পড়ে।

শহিদুল জানান, এরপরও শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য নগরীর শেভরন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে করানোর পরামর্শ দেন ডা. আহসানুল আবেদীন। সেখানকার এক্স-রেতেও পেরেকের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

তারপর প্রথমদিকে অপারেশনের চিন্তাভাবনা করলেও রোববার রাতে ডা. আহসানুল আবেদীন বিশেষ কায়দায় রোগীর মলত্যাগের মাধ্যমে পেট থেকে পেরেক বের করার ব্যবস্থা করেন।

ভুক্তভোগী শহিদুল ইসলাম বর্তমানে সিএসসিআর হাসপাতালের ৭০৯ নম্বর কেবিনে ভর্তি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। ডা. শেলীর ভুল সিদ্ধান্তে আমাকে ছুরির নিচে যেতে হতো। কিন্তু টাকা ছাড়া অপারেশন না করার সীদ্ধান্ত আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।

পেটের ভেতরে পেরেকে কীভাবে গেল- সে বিষয়ে ‘কিছু জানেন না’ বলে শহিদুল জানান।

তবে অভিযোগের বিষয়ে সিএসসিআর হাসপাতালেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সালাউদ্দিন মাহমুদ বলেন, অপারেশন করানোর আগে বিষয়টি টের পেয়ে ওষুধ সেবনের মাধ্যমে পেরেকটি বের করা হয়েছে। এটি চিকিৎসা শাস্ত্রে দারুণ সফলতা।

Bootstrap Image Preview