এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ। সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে চলবে বেলা ১টা পর্যন্ত। পরীক্ষা চলবে ৬ মে পর্যন্ত।
সোমবার শুরু হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ১৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৫ জন। বাকিরা অনিয়মিত ও মান উন্নয়ন পরীক্ষার্থী।
এবার মোট ১৩ লাখ ৫৮ হাজার ৫০৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাদ্রাসার আলিমে ৮৮ হাজার ৪৫১ জন এবং কারিগরিতে এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষার্থী ১ লাখ ২৪ হাজার ২৬৪।
মাদ্রাসা বোর্ডে দাখিল পরীক্ষার পর ২ বছর আগে ১ লাখ ২ হাজার ৫৫৫ জন নিবন্ধন করেছে। তাদের মধ্যে ৬৯ হাজার ৪৩ জন নিয়মিত হিসাবে এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
এ বিষয় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, মাধ্যমিকের তুলনায় উচ্চ মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী যেটা কম সেটাকে ঝরে পড়া বলা ঠিক হবে না।
এই স্তরে নানা বাস্তবতা কাজ করে। পরিসংখ্যান মেলালে দেখা যাবে, মাধ্যমিকে ছাত্রী বেশি পাস করেছিল। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্র পরীক্ষার্থী বেশি। এর প্রধান কারণ অনেকেরই বিয়ে হয়ে গেছে। আর যাদের বিয়ে হয়নি কিন্তু পাঠবিরতি করেছে, তারা নিরাপত্তাসহ নানা সামাজিক কারণে কলেজে ভর্তি হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে, এবারের এই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য ২০১৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার পর একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছিল ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫২ জন।
তাদের মধ্যে ১০ লাখ ১ হাজার ৭১৭ শেষ পর্যন্ত আজ পরীক্ষা দিচ্ছে। ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৩৫ জন একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির পর লেখাপড়া ছেড়েছে।
অপরদিকে ২ বছর আগে যেহেতু মাধ্যমিক পাস করেছে ১৪ লাখ ৩১ হাজার ৭২২ জন এবং এরপর একাদশ শ্রেণীতে ১৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫২ জন; সেই হিসাবে পাসের পরই হারিয়ে গেছে ৯১ হাজার ৯৭০ জন।
এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে কিছু কারিগরি শিক্ষার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে ভর্তি হলেও বাকিরা লেখাপড়ার পাট চুকিয়েছে মাধ্যমিক পাসের পরই।
আর কারিগরিতে একইভাবে একাদশ শ্রেণীতে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৫ জন নিবন্ধন করে এবার ৯৮ হাজার ৯২৪ জন নিয়মিত হিসেবে অংশ নিচ্ছে। এবার মোট অনিয়মিত পরীক্ষার্থী ৩ লাখ ৩১ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী ৩ হাজার ২৯০ জন। মান উন্নয়ন পরীক্ষার্থী ১৫ হাজার ২৯৬।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮টি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৫০ জন অংশ নিচ্ছে।
এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৬২২ জন, রাজশাহী বোর্ডে ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৫৪ জন, কুমিল্লা বোর্ডে ৯৫ হাজার ২০২, যশোর বোর্ডে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০৯ জন, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৯৯ হাজার ৬৬৪ জন, বরিশাল বোর্ডে ৬৪ হাজার ৯১৯, সিলেট বোর্ডে ৭৬ হাজার ৬৯৮, দিনাজপুর বোর্ডে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৭৯ জন পরীক্ষার্থী।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক তরুণ কুমার সরকার বলেন, প্রথমদিন এইচএসসিতে বাংলা প্রথমপত্র, আলিমে কুরআন মাজিদ এবং এইচএসসি বিএমে বাংলা-২ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, যাতে প্রশ্নফাঁস না হয়, সেজন্য আজ থেকে ৫ সপ্তাহ সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সে অনুযায়ী ৬ মে পর্যন্ত সারা দেশে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
এছাড়া প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে মোবাইল ব্যাংকিং কঠোরভাবে নজরদারি করা হবে। বিশেষ করে কোনো মোবাইল নম্বরে একাধিকবার একই অঙ্কের টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট এজেন্টকে বিষয়টি থানায় জানাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পরীক্ষার্থীদের আগের মতোই ৩০ মিনিট আগে আবশ্যিকভাবে কেন্দ্রের আসন গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে পৌঁছাতে দেরি করলে রেজিস্ট্রারে তার নাম, রোল নম্বর ও বিলম্বের কারণ উল্লেখ করতে হবে।
এ ধরনের ঘটনা পরীক্ষার দিনই কেন্দ্র সচিব সংশ্লিষ্ট বোর্ডকে জানাবেন। কেন্দ্রে শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (কেন্দ্র সচিব) সাধারণ মানের একটি ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। কেউ মোবাইল ফোন বা অননুমোদিত ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়া আগের বিভিন্ন পরীক্ষার মতো এবারও পরীক্ষা শুরুর মাত্র ২৫ মিনিট আগে কোন সেট প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে, সেটা জানানো হবে।
পরীক্ষার হলে প্রশ্নপত্র বণ্টনে যাতে কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য নিয়মিত ও অনিয়মিত পরীক্ষার্থীদের আলাদা কক্ষে আসন বিন্যাস করে প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে।