রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের দিন ওই ভবনের অষ্টম তলায় আশিক ইন্টারন্যাশনালে কর্মরত ছিলেন ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অ্যাঞ্জেলা গোমেজ। জীবন বাঁচাতে টাওয়ারের ছাদে গিয়ে লাফিয়ে পাশের ভবনে গিয়ে আত্মরক্ষা করেন।
অ্যাঞ্জেলা বলেন, ভবনে আগুন লাগার খবরে ইলেক্ট্রিক সুইচ বন্ধ করে দিয়ে বস সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলেন। আমরা এগিয়ে যাওয়ার পরই শুনতে পাই ছয় এবং সাত তলায় আগুন লেগেছে এবং নিচে যাওয়া যাচ্ছে না। এরপর আমরা সিঁড়ি দিয়ে ১২ তলায় পৌঁছলেও আমি প্রেগন্যান্ট থাকায় আর সামনে যেতে পারছিলাম না। তখন আমাকে একজন বললেন, ছয় ও সাত তলায় লোকজন মারা যাচ্ছে। আপনি পথ আটকে রাখলে অন্যরাও মারা পড়বে।
তিনি বলেন, বহু কষ্টে ২২ তলার ছাদে গিয়ে দেখি অনেক লোক। পাশের ভবনে লাফিয়ে পড়ছেন। আমি রেলিং থেকে লাফিয়ে পড়তে পারছিলাম না। এই ছাদে থাকলে মারা যাব, এই ভয়ে আমি পাশের ছাদে লাফ দেই।
তিনি আরও বলেন, ওই ছাদে যাওয়ার পর আমি আরো অসুস্থ হয়ে পড়ি। গর্ভবতী বলে আমার রক্তপাত শুরু হয়। সবাই বলে, ছাদ থেকে নেমে রিকশায় হাসপাতালে যান। ওই ভবনেও সব লাইট বন্ধ করে দেয়া হয় এবং লিফটও সচল ছিলো না। তাই হেঁটেই ২২ তলা থেকে নিচে নামতে হয়।
হাসপাতালে যাওয়ার পরও আমার রক্তপাত থামছিল না। হাসপাতাল থেকে রিলিজ হওয়ার পরও থেমে থেমে রক্তপাত হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলতে পারছেন না, আমার বাচ্চা বাঁচবে কিনা। ১৫ দিন পর তারা জানাতে পারবেন। আগুন থেকে আমি বেঁচে গেলেও সন্তানের জীবন নিয়ে আমি শংকিত।
অ্যাঞ্জেলা গোমেজ বলেন, এফ আর ভবনে কোনো ইমার্জেন্সি সিঁড়ি আছে কিনা তা আমার জানা নেই। অগ্নিকাণ্ডে আমার তিনজন সহকর্মী মারা গেছেন। আমি চাই, আর কাউকেই যেন এমন ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সম্মুখীন হতে না হয়।