স্বামীর শেষ আদেশ মেনে ছাদে ওঠেন বৃষ্টি। কর্মস্থল ৯ম তলা থেকে ১৮ তলার সিঁড়ি পর্যন্তও পৌঁছাতে পেরেছিলেন। এরপর সিঁড়িতেই লুটিয়ে পড়ে তার দেহ। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ঠাঁই হয় তার। তবে পরিবারের আবেদনে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ছাড়পত্র মেলে বৃষ্টির।
আজ শুক্রবার ভোররাতে মরদেহ বুঝে নেওয়ার পর সকাল ৭টায় রওনা হয়ে দুপুরে যশোর এসে পৌঁছায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি। জানাজা শেষে বিকালে যশোরের কারবালা গোরস্থানে বৃষ্টির দাফন হয়।
মর্গে জামাকাপড় ও স্যান্ডেল দেখে আত্মীয় ও সহকর্মীরা তার লাশ শনাক্ত করেন। চেহারা চেনা না গেলেও শরীর পোড়েনি। আগুনে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডে নিহত যশোরের মেয়ে শেখ জারিন তাসমিম বৃষ্টি (২৫) ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানবসম্পদ বিষয়ে স্নাকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরে যোগ দেন বনানীর এফআর টাওয়ারে থাকা ইইউআর সার্ভিস বিডি লিমিটেডের মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগে।
২০১৬ সালের ২৬ মার্চ সহপাঠী যশোরের পুরাতন কসবা এলাকার কাজী সাদ নূরের সঙ্গে বিয়ে হয় বৃষ্টির। কাজী সাদ নূর ঢাকার রেডিসন হোটেলে কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। চাকরির সুবাদে ঢাকার খিলক্ষেতে বসবাস করতেন তারা। মাত্র দু'দিন আগে ২৬ মার্চ তৃতীয় বিয়ে বার্ষিকী উদযাপন করেছিলেন তারা।
দুই বোনের মধ্যে বৃষ্টি ছিলেন ছোট। চাকরির কারণে বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া কম ছিল। তবে বড় বোনের সঙ্গে সমন্বয় করে ঈদের ছুটিতে যশোরে বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে আসতেন তারা।
বৃষ্টির বাবা মোটরপার্টস ব্যবসায়ী শেখ মুজাহিদুল ইসলাম খবর পেয়ে বৃহস্পতিবারই মেয়ের মরদেহ আনতে ঢাকায় যান।