Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

মানুষের জীবন বাঁচাতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নিয়ে হাত বাড়ায় শিশু নাঈম

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ মার্চ ২০১৯, ০৩:১৯ PM
আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯, ০৩:৩১ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে একটি ছেলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসা কুড়াচ্ছে। ছবিতে দেখা যায়, আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহৃত একটি পাইপের ফাটা অংশ দুহাতে চেপে ধরে আছে এক শিশু। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর ওই ছেলে এখন বীর বনে গেছে।

ছেলেটির নাম নাঈম ইসলাম। রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে সে। পড়ে ব্র্যাকের আনন্দ স্কুলের পঞ্চম শ্রেণিতে। নাঈমের বাবা একজন ডাব বিক্রেতা, আর মা কর্মজীবী।

বনানীর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে মরেছে ২৫টি তাজা প্রাণ। আগুন লাগার পর থেকেই ভবনে অবস্থান করা মানুষগুলো যখন জানালা দিয়ে হাত বাড়িয়ে বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিলো, তখন নিচে দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন হাজারো মানুষ। তাদের অনেকই আহাজারি করছিলেন কেউবা তুলছিলেন ছবি।

আগুন লাগা ভবনের নিচে ও আশপাশে বিপুলসংখ্যক মানুষ ভিড় করায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের কাজ করতে বেগ পেতে হয়েছে। যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হচ্ছে সমালোচনা। তবে বেশকিছু মানুষ মানুষ হাত মিলিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে। তারা সার্বক্ষণিক রাস্তা খালি করে পানির গাড়ি কিংবা অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াতে সহায়তা করে গেছেন।

হাজারো উৎসুক জনতার মাঝে একটি ছবি নজর কেড়েছে সবার। একটি ছোট্ট শিশু ফায়ার সার্ভিসের ফাটা পাইপ দিয়ে বের হয়ে যাওয়া পানি আটকে রাখার চেষ্টা করছে। শিশুটির চোখেমুখে চরম উদ্বেগ আর ‍উৎকণ্ঠা। বৃহস্পতিবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার ছবি।

আগুনের খবর শুনেই বনানীতে ছুটে আসা নাঈম জানায়, তার বাবা রুহুল আমিন বনানীতে ডাব বিক্রি করেন। তাই আগুনের খবর শুনে বনানীতে ছুটে আসে নাঈম। আসার পর ভিড় ঠেলে আগুন লাগা এফআর টাওয়ারের সামনে চলে আসে। এসে নিজ তাড়নাতেই ফায়ার সার্ভিসের পাইপ ধরে অন্যদের সঙ্গে সহযোগিতার চেষ্টা করে।

এরপর যখন ভবনের গ্লাস ভেঙে পড়ে তখন অন্যরা নাঈমকে দূরে সরিয়ে নেয়। গ্লাস ভাঙা একটু কমতেই নাঈম দেখে একটি পানির পাইপ ফেটে তা থেকে পানি বের হয়ে যাচ্ছে। তখন পাশ থেকেই একটি পলিথিন কুড়িয়ে তা দিয়ে পাইপের ফাটা অংশটি চেপে ধরে নাঈম।

গণমাধ্যমকে নাঈম বলে, আমি কোন ভয় পায়নি, ওই সময় আল্লার কাছে সবাই দোয়া করছিলো ভেতরের মানুষগুলা যেন বাঁচে। আমিও চাইছিলাম একটু সাহায্য করে যদি কাউকে বাঁচানো যায়।

নাঈম আরো জানায়, বাসায় যাওয়ার পর তার নানী ও এলাকার অন্যরা সবাই তাকে বাহবা দিয়েছে। সবাই জড়িয়ে ধরেছে। নানী বলেছে, তোর ছবি দেখছি, ভালো কাজ করছিস!

বড় হয়ে সরকারি চাকরি করার স্বপ্ন নাঈমের। এখন সে ভালোভাবে পড়াশোনা করে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চায়। ফাটা পাইপ চেপে ধরার মতো নিজের সংসারের হাল ধরতে চায় নাঈম।

Bootstrap Image Preview