Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ রবিবার, মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

১০ বছরে সারাদেশে ১৬ হাজার অগ্নিকাণ্ড, প্রাণ হারিয়েছেন ১৫৯০ জন

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৮:২৪ PM
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৮:২৪ PM

bdmorning Image Preview


গত ১০ বছরে সারা দেশে ১৬ হাজার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবি সমিতি (বেলা)। এসব অগ্নিকাণ্ডে ১ হাজার ৫৯০ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত ‘অগ্নিঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ পুরান ঢাকা’ শীর্ষক এক গণশুনানিতে বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “পুরান ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালের ৩ জুন ঘটে যাওয়া অগ্নিকাণ্ডে সরকারি হিসেবে ১২৪ জনের প্রাণহানি ঘটে। সে ঘটনায় একই পরিবারের ১১ জন ব্যক্তি প্রাণ হারান।

“সেই ঘটনার পর সরকারি পর্যায়ে গঠিত সকল তদন্ত কমিটি এলাকার রাসায়নিক মজুদকেই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে এবং পুরান ঢাকার সকল আবাসিক ভবন থেকে রাসায়নিকের দোকান, কারখানা ও গুদাম উচ্ছেদের সুপারিশ করে। একই সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদামঘরের মালিকদের প্রথমে ২০১০ সালের ১৭ আগস্ট, পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। স্পষ্টতই সেই নির্দেশ এখনো প্রতিপালিত হয়নি। ৯টি বছর অতিক্রান্ত হলেও যে রাসায়নিকের গোডাউন থেকে নিমতলীতে সাতজন নিহত এবং ২৮ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। সে গোডাউনের মালিকের এখনো পর্যন্ত কোনো আইনানুগ শাস্তি হয়নি”, যোগ করেন বেলার প্রধান নির্বাহী।

রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, “এরমধ্যে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে আরও ৭১ জনের প্রাণহানি হয়। বিভিন্ন মহল থেকে দোষী ব্যক্তির শাস্তির আশ্বাস মিললেও ওয়াহিদ ম্যানশনের মালিক বর্তমানে জামিনে মুক্ত অবস্থায় আছেন”।

এসময় বিসিক এর হাতে কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তরের দায়িত্ব কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, “ট্যানারি পল্লী স্থানান্তরের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কাজেই সরকারি এই সংস্থা কতটুকু কাজ করবে ভাবার বিষয়”।

তিনি এসময় আরো, ১০৫০ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার ১১টি ওয়ার্ডে ২৪ হাজার স্থাপনা রয়েছে। যার বেশির ভাগেরই রাজউকের অনুমোদন নেই। ঘনবসতিপূর্ণ পুরান ঢাকায় প্রতি একরে এলাকা ভেদে জনসংখ্যার ঘনত্ব ২৬৫ থেকে ১১০০ জন। পুরান ঢাকায় বিভিন্ন আবাসিক স্থাপনায় প্রায় ১৫ হাজার রাসায়নিক গুদাম রয়েছে।

“ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালে পুরান ঢাকার লালবাগ, হাজারীবাগ, সদরঘাট ও সিদ্দিকবাজারে মোট ৪৬৮টি অগ্নিকাণ্ডে র ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন ১টির বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে এসব এলাকায়, যেখানে অবৈধ রাসায়নিক গুদামঘর ও কারখানার সংখ্যা ৫০০ টিরও অধিক”, যোগ করেন রিজওয়ানা হাসান।

গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

মানবাধিকার কর্মী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে অংশ নেন- ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদ, বুয়েট কেমিকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া, স্থপতি ড. ফরিদা নিলুফার, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, আসক নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজ, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা। এছাড়া চুড়িহাট্টা অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে কথা বলেন- মো. নাসির উদ্দিন, মনসুর আলী দীপু, ময়না বেগম।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীর বহুতল এফ আর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বনানীর এই অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে সাতজন নিহত এবং ২৮ জন আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে একজন শ্রীলঙ্কান নাগরিক রয়েছেন।

Bootstrap Image Preview