রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার চার ঘণ্টার বেশি সময় পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে এ কাজে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করে। সেই সঙ্গে যোগ দেয় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া সঙ্গে স্থানীয় মানুষরাও যোগ দেন।
কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এত দীর্ঘ সময় লাগার কারণ কী এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের কর্মকর্তা দেবাশীষ বর্ধন জানান, মূলত দুইটি কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়েছে।
১. পানির অভাব
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য প্রচুর পানি দরকার হয়। এক সময় পানির যোগান এবং তা যথাস্থানে দ্রুত সময়ে পৌঁছানো একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশি সময় লাগার এটি একটি কারণ।
২. সিনথেটিক ফাইবার
দেবাশীষ বর্ধন জানান, ঐ ভবনের বেশিরভাগ তলায় রয়েছে বিভিন্ন অফিস, যেগুলো ডেকোরেট বা সজ্জার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে সিনথেটিক ফাইবার।
এই সিনথেটিক ফাইবারে আগুন ধরে গিয়ে প্রচুর ধোঁয়া হয়েছে। আর এই ধোঁয়ার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় বেশি লেগেছে।
ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দিলীপ কুমার ঘোষ।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না ওই ভবনে। একটি বাণিজ্যিক বহুতল ভবনে যে পরিমাণ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা প্রয়োজন তা সেখানে ছিল না। তবে দু-একটা ফ্লোরে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল।
দিলীপ কুমার ঘোষ বলেন, অনেকে অনেক কিছুই বলার চেষ্টা করেছে; তবে আমরা বিশ্বমানের সেবার ব্যবস্থা করেছি। ফায়ার সার্ভিস আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করায় ৪টা ফ্লোরের বাইরে আগুন ছড়াতে পারেনি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে ওই ভবন লাগোয়া ভবনগুলোতেও আগুন ছড়ায়নি। তবে আগুনের ধোঁয়া ওই ভবন ও আশপাশে ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। অনেকে লাফ দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করে। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
এদের মধ্যে ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনজন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দুজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন এবং ঘটনাস্থলে ১১ মারা গেছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭০ জন।