ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে মরলেন স্বামী, স্ত্রী নিখোঁজ

রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এক শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ সাত জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেক। এ ঘটনায় ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ওই ভবনের একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতে মাকসুদুর রহমান (৩৫) ও তার স্ত্রী রুমকী (২৮)। আগুন লাগার পর বাঁচার জন্য ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন মাকসুদুর। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। এদিকে নিহত মাকসুদুরের স্ত্রী রুমকী এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।

তাদের খালাতো ভাই ইমতিয়াজ জানান, পুরান ঢাকার বাসিন্দা মাকসুদুর। স্বামী-স্ত্রী একই অফিসে চাকরি করতেন। পরিবারের একমাত্র ছেলে তিনি। বাবা মারা গেছেন ছোট বেলায়। সম্প্রতি মা'কে নিয়ে নতুন কেনা ফ্ল্যাটে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু এখন সবই শেষ হয়ে গেল।

এ সিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন, বনানীর নাজমুল হাসানের ছেলে রেজাউল করিম কাজী (৪২), ক্যান্টনমেন্টের ফয়জুল ইসলামের ছেলে হিরু (৫০), উত্তরা ৬নং সেক্টরের মজিবুর রহমানের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫০), পাটগ্রামের আবু বকর সিদ্দিক বাচ্ছুর ছেলে তানজির সিদ্দিক আবীর, রংপুর পীরগঞ্জের মৃত আবদুল রশীদ মুন্সীর ছেলে মো. মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), তানজির আবির, সালাউদ্দিন (৩০), নজরুল ইসলাম, জাফর আহমেদ, জসিম উদ্দিন, রেজাউল করিম রাজু, এসকে জেরিন বৃষ্টি (২৯) ও জেবুনেচ্ছা (২৭)।

এ ঘটনায় বহু মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও ভবনটিতে আটকা পড়েছে শতাধিক মানুষ।

এ দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের সেনা সদস্যরা। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনায়েত হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রায়ান খান বলেন, আমরা তিন-চারজন নিচে দাঁড়িয়ে নাস্তা করছিলাম। ভবনটির ৯ কিংবা ১০ তলায় দাউ দাউ করে প্রচুর ধোঁয়া বের হতে দেখি আমরা। অনেককে চিৎকার করে নিচে নামতে দেখি। তখনই আমি ৯৯৯ এ ফোন দেই। পাশাপাশি আরও ২-৩ জন ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিয়েছে।

তিনি বলেন, কয়েক মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক ইউনিট সেখানে উপস্থিত হয়। এর মধ্যে ল্যাডার ইউনিট (বহুতল ভবন থেকে উদ্ধারকারী সিঁড়ি) ও মোটরসাইকেল ইউনিট ছিল।

ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও ভবনের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীরা অবস্থান করছেন। ভবনের অধিকাংশ লোকই নিচে নেমে অবস্থান নিয়েছে।

ভেতরে অনেকে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বহুতল ভবনটির পাইপ বেয়ে অনেককে নিচে নামার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে।