Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

‘গরমে টিকতে পারতেছিলাম না, তাই লাফ দিছি’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৭:১১ PM
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৭:১১ PM

bdmorning Image Preview


আগুনের তাপ সহ্য করতে না পেরে বনানীর এফ আর টাওয়ার থেকে লাফ দেন রেজাউল আহমেদ (৩৬)। নিচে পরে তার হাত ও পা ভেঙে গেছে। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহত রেজাউল আহমেদকে উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে ঢামেকে ভর্তি তিনি।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের ১৭ নম্বর রোডের ২২তলা ভবনে আগুন লাগে। আগুন লাগার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন রেজাউল আহমেদের মামাশ্বশুর জনি।

তিনি বলেন, ‘আগুনে আটকা পড়ার পর আমরা ওর সাথে কথাবার্তা বলছি। কথা হওয়ার পরে হঠাৎ মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়। আমরা ওকে বলছি, লাফটাফ দিস না।’

তিনি বলেন, ‘যখন আগুন বাড়তে থাকে, তহন (তখন) ও ওইখান থেইক্যা লাফ দিছে। যেখানে পড়ছে, ওইখান থেইক্যা আরেক ভাই রেজাউলকে নিয়া চইলা আইছে। কুর্মিটোলা নিছিল ওরে। জ্ঞান আছিল, কথা বলতেও পারতেছিল। ও বলছেছিল, লাফ দিছে।’

জনি আরও বলেন, ‘তহন আমি ওরে (রেজাউল) বলছি, তরে না কইছিলাম তুই থাকবি ওইহানে। ও কলে মামা, এমুন গরম হইছে, আমি আর টিকতে পারতেছিলাম না। তাই লাফ দিছি।’

আগুন লাগার শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের তৎপরতা কম ছিল বলে অভিযোগ করেন জনি। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তেমন কাজ করতেছিল না। আমাদের সঙ্গে অনেক স্টুডেন্ট ছিল, আমরা সবাই তাদের হেল্প-টেল্প করছি।’

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা দেবাশীষ বর্ধন জানান, এখন পর্যন্ত ভবনটি থেকে অন্তত শতাধিক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে তাঁরা। উদ্ধার হওয়া সবাই কমবেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। উদ্ধারের পর আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

দেবাশিষ বর্ধন বলেন, ‘আমরা সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছি। আমাদের ২৫টি ইউনিট কাজ করছে। ঘটনাস্থলে মেয়র ও ফায়ার সার্ভসের ডিজি রয়েছেন। হাই-রাইজ ভবনে উদ্ধার কাজ চালানোর জন্য আমাদের সব ইক্যুপমেন্ট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটবার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি হয়েছে। হতাহতের সংখ্যা এবং অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে বনানীর এফআর টাওয়ারের ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। পরে এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। এর আগে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও যোগ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে হেলিকপ্টার থেকে বালু ফেলে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়াও ল্যাডার ইউনিট (বহুতল ভবন থেকে উদ্ধারকারী সিঁড়ি) ও মোটরসাইকেল ইউনিটও উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণ করেছে। কাঁচে ঘেরা পুরো ভবনটির বাইরে থেকে কাঁচ ভেঙে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভেতরকার ধোয়া বের করছেন এবং ল্যাডার দিয়ে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনছেন। তবে ভেতরে ঠিক কতজন ব্যক্তি আছেন তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।

ভবনের নিচে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স। আহতের দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে সেখানে। আহতদের অনেককেই কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

Bootstrap Image Preview