Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ রবিবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ঢামেক ও কুর্মিটোলা হাসপাতালে আনা হচ্ছে আহতদের

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৪:৫৭ PM
আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৪:৫৭ PM

bdmorning Image Preview


রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে আহতদের কুর্মিটোলা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজনকে ভবনের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ভবনটির ৯ তলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। 

অগ্নিকাণ্ডে এখনো ভবনটিতে অনেকে আটকে পড়ে আছে। এদিকে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে অংশ নিয়েছেন  সেনাবাহিনীর সদস্যরা। আটকে পড়াদের এয়ার লিপ্টের মাধ্যমে উদ্ধার করা হচ্ছে। 

এর আগে, প্রাণ বাঁচাতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। অনেকে প্রাণ বাঁচাতে আকুতি করতে দেখা যায়। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।

আগুন নিয়ন্ত্রনে আসার পর থেকে এফ এর টাওয়ার থেকে একে একে আটকে পড়াদের উদ্ধার করতে শুরু করেন বিমানবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত হেলিকপ্টার দিয়ে ভবনে ছাদ থেকে তিনজনসহ ওই ভবন থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ভবনের ভেতরে যারা আটকা পড়েছেন তাদেরকে ভবনের ছাদে যেতে বলা হচ্ছে।

মো. গিয়াস উদ্দিন নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই ভবনের পঞ্চম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর তা উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওই ভবন থেকে অন্তত সাত জন লাফিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের গাড়িতে তুলে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনের উপরের দিকের বিভিন্ন ফ্লোরের জানালা ভেঙে সাহায্যের আশায় হাত নাড়তে দেখা যায় অনেককে। উপরে থেকে শার্ট, প্যান্ট দিয়ে ইশারা করছেন অনেকে। এছাড়া উদ্ধারের জন্য চিরকুট লিখে নিচে ফেলছেন তারা। আটকে পড়াদের মধ্যে অনেকে ভবনের কাঁচ ভেঙে দেয়াল বেয়ে নামার চেষ্টা করছেন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের সাহস জুগিয়ে যাচ্ছেন। আটকা পড়াদের উপর থেকে লাফ দিতেও নানাভাবে নিষেধ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তবে অনেকে রশি দিয়ে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন।

যাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে সিরি ইন্দ্রিকা (৪৬) নামে এক শ্রীলংকান নাগরিকও রয়েছেন। তিনি হাতে আঘাত পেয়েছেন বলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছেন।

আবদুস সালাম নামের ওই ব্যক্তির স্বজন বিকেল পৌনে ৩টায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন, ‘একটু আগে পর্যন্ত মোবাইল ফোনে কথা বলছিলাম। কিন্তু এখন আর নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না। জানি না ওরা বাঁচবে কিনা।’

এমনিভাবে মৃত্যুর খুব কাছাকাছি অবস্থান করছেন ভবনে আটকে পড়া বহুসংখ্যক নারী, পুরুষ ও শিশু। কেউ কেউ ধোঁয়ায় দম বন্ধ হওয়ার আগে বাঁচার জন্য বহুতল ভবন থেকে লাফ দেন। ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া এক নারী জানিয়েছেন, ভেতরে ধোঁয়ায় অনেকের শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে।

আগুন লাগার পরপরই ফাহাদ ইবনে কবীর নামে এক যুবক ফোন দেন মা ফরিদা ইয়াসমিনের কাছে। ফোন করে মাকে জানান, ভেতরে আগুনের ধোঁয়ায় তার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে। তিনি দম নিতে পারছেন না।

ছেলের সঙ্গে কথা বলার পরপরই মা ফরিদা ইয়াসমিন ছেলের সন্ধানে চলে আসেন এফ আর টাওয়ারের নিচে। সেখানে ছেলের সন্ধানে তিনি আর্তনাদ শুরু করেন। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘ছেলের সঙ্গে এক ঘণ্টা আগে আমার কথা হয়েছে। এখন মোবাইল নম্বর বন্ধ পাচ্ছি।’

তার ছেলে ১২ তলায় ডাট গ্রুপে কাজ করেন। তিনি সেখানকার আইটি ইঞ্জিনিয়ার।

ফাহাদের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের ভবানীপুরে। দুই ভাইয়ের মধ্যে ফাহাদ ছোট।

Bootstrap Image Preview