Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আগামীকাল পাঁচ রাজাকারের রায়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০২:১৬ PM
আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯, ০২:১৬ PM

bdmorning Image Preview


আগামী ২৮ মার্চ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার পলাতক পাঁচ রাজাকারের রায় ঘোষণা করা হবে।

বুধবার (২৭ মার্চ) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ দিন ধার্য  করেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মোখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী।

মোট সাত রাজাকারের মধ্যে আব্দুর রহমান (৭০) ও আহাম্মদ আলী (৭৮) গ্রেফতারের পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অবস্থায় মারা যান। বাকি পাঁচজন পলাতক রয়েছেন।

পলাতক রাজাকাররা হলেন- শেখ মো. আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানা (৬৬), মো. আব্দুল খালেক তালুকদার (৬৭), মো. কবির খান (৭০), আব্দুস সালাম বেগ (৬৮) ও নুরউদ্দিন ওরফে রদ্দিন (৭০)।

প্রসিকিউশন সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণার পূর্বধলার মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কাদির একাত্তরে বড় ভাই আবদুল খালেককে হত্যার ঘটনায় ২০১৩ সালে মামলা করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ২১ আগষ্ট বাড়হা গ্রামে আবদুল খালেককে গুলি করে হত্যার পর কংস নদীতে লাশ ভাসিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয় ওই মামলায়।

মামলাটি ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে পরের বছরের ১৫ মার্চ পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করেন। এরপর তিনি ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ প্রসিকিউশনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

প্রসিকিউশন বিভাগ ২০১৬ সালের ২২ মে আসামিদের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ দাখিল করে এবং একই বছর ১২ জুন অভিযোগ আমলে নেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে  হত্যা-গণহত্যা,অপহরণ,নির্যাতন,লুণ্ঠন,অগ্নিসংযোগ,ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রাজাকারদের বিরুদ্ধে একাত্তরে ডা. হেম সুন্দর বাগচী হত্যা, নির্যাতন, লুন্ঠণসহ একাধিক মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্বাধীনতার পক্ষের লোকদের বাড়িতে নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লূটপাট চালায় বলে প্রসিকিউশনে অভিযোগ রয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তথ্য মতে, আসামিদের মধ্যে মজিদ মওলানা মুক্তিযুদ্ধে সময় নেজামে ইসলামির নেতা হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন।

সর্বশেষ তিনি জামায়াতের রাজনীতি করতেন। খালেক তালুকদার একাত্তরে মুসলিম লীগের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। পরবর্তীতে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সর্বশেষ তিনি পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগেরও সদস্য হন। এছাড়া কবির খান মুসলিম লীগের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। সর্বশেষ তিনি উপজেলা বিএনপির সদস্য ছিলেন। আবদুস সালাম বেগ ও নুরউদ্দিনও মুক্তিযুদ্ধের সময় মুসলিম লীগের কর্মী হিসেবে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। সর্বশেষ বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।

এই বিষয়ে প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমীন খান মুন্নী  বলেন এই মামলায় প্রথমে সাতজন আসামি ছিল। সাত আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল তদন্ত সংস্থা। প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ১২ আগষ্ট সব আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ওইদিনই এক আসামি আবদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে ট্রাইব্যুনালে এই মামলার যুক্তিতর্কের সময় গ্রেফতারকৃত আবদুর রহমান (৭০) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

মুন্নী আরও বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগই আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালতের কাছে আমরা তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছি।

Bootstrap Image Preview