দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যা বললেন ভিপি নুর

বাংলাদেশে কাগজ-কলমে শিক্ষার হার বাড়লেও প্রকৃত শিক্ষার মান উন্নত হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাত ৯টায় বেসরকারি একটি স্যাটেলাইট চ্যানেলে ‘বাংলাদেশের ৪৮ তারুণ্যের চোখে’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ভিপি নুর বলেন, কাগজ-কলমে আমরা বলি শিক্ষিতের হার বাড়ছে। আমি বলব- শিক্ষার হার বাড়ছে কিন্তু মানটা খুব উন্নত হচ্ছে না।

এই ঢাবি শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় বাংলাদেশের একটি নিউক্লিয়াস। কিন্তু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৮ শতাংশ কলা ও বাণিজ্যিক অনুষদের শিক্ষার্থী, আর ২২ শতাংশ হচ্ছে বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী।

অথচ বর্তমান বিশ্ব বিজ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে ঢাবির মতো একটি জায়গায় বিজ্ঞানের এ অবস্থা।

প্রশ্নফাঁস সম্বন্ধে তিনি বলেন, বর্তমানে প্রশ্নফাঁস সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। এটি এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। আর এটি আমাদের দুর্বল শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম একটি প্রমাণ। আরও কিছু প্রমাণ রয়েছে- আমরা দেখি বর্তমানে কারিগরি শিক্ষা বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সেভাবে উন্নত হয়নি।

আজকে চীনের কথা ধরুণ, তারা ১৫০০ টাকার মোবাইল বানাতে পারে, আবার সবচেয়ে উন্নত মানের প্রযুক্তিও বানাতে পারে। কিন্তু আমরা সেই প্রথাগত পদ্ধতিতেই পড়ে আছি।

নুর বলেন, আমরা এখনও কলা অনুষদনির্ভর বা বাণিজ্যিক অনুষদনির্ভর। বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যে সাবজেক্টগুলো সেসব আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় খুব এটা অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না।

ঢাবির উদাহরণ দিয়ে ভিপি নুর বলেন, ২০১৭ সালে ঢাবির মতো একটি প্রতিষ্ঠানের সাবজেক্ট খুলতে হয় প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন বিভাগ নামে; আর বন্ধ করে দেয়া হয় অ্যাপলাইড ফিজিকসের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

এই সাধারণ একটি বিষয় ভাবলেই দেখা যায় যে, শিক্ষার কি দুরবস্থা রয়েছে। যেটি আমরা অস্বীকার করতে পারব না।

নুর বলেন, অর্থনৈতিকভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষার হার বাড়ছে, সার্টিফিকেট হয়তো পাচ্ছি, কিন্তু আমরা প্রকৃত মান যেটি সেটি পাচ্ছি না।

এমনকি ভিপি হওয়ার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে গণভবনে গিয়েছিলাম। সেখানে আমার জায়গা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে বলেছি, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সিলেবাস মডিফায়েড করা দরকার। এটি বর্তমান সময়ে খুবই প্রয়োজনীয়, বলেন তিনি।

এই আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাবির অর্থনীতি বিষয়ের অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা, আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।