জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সিনিয়র বড় ভাইয়ের থাপ্পড়ে কান ফেটেছে জুনিয়র ছাত্র মো. রাজনের। মীর মশাররফ হোসেন হলের গণরুমে দুই বছর আগে র্যাগিংয়ের সময় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে শনিবার (২৩ মার্চ) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাজন মিয়া প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রাকিব হাসান সুমন এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের সাকিব জামান অন্তুকে কান ফাটানোর জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা উভয়ই ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
রাজনের ব্যাচের শিক্ষার্থী ও মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, প্রথম বর্ষে সব শিক্ষার্থীর গণরুমে থাকতে হয়। সেখানে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা ‘আদব কায়দা বা ক্যাম্পাসের নিয়ম কানুন’ শিখানোর নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন (র্যাগিং) করে।
ওই হলে ৪৬ ব্যাচ গণরুমে উঠলে ৪৫ ব্যাচের ব্লকের (যারা ছাত্রলীগের ব্লকে থাকে) শিক্ষার্থীরা রাত ১২টার দিকে এসে ভোর পর্যন্ত র্যাগিং করাতো।
অভিযোগপত্রে রাজন উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালের ৭ মে মীর মশাররফ হোসেন হলের গণরুমে সিটিং (র্যাগিং) চলছিল। সে সময় কথার জের ধরে রাকিব হাসান আমাকে পরপর কয়েকটা থাপ্পড় মারে। তখন আমি তাকে থাপ্পড় না দেয়ার জন্য অনুনয় করি। এরপর পাশে থাকা সাকিব জামান এসে আমাকে আরও কয়েকটি থাপ্পড় দেয়। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই। পরে আমাকে মেডিকেলে নেয়ার সময় আরেকজন আবারও আমাকে থাপ্পড় দিয়েছিল।
এ ঘটনার পর বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। এনাম মেডিকেলের চিকিৎসক বাম কানের পর্দা ফাটার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রাজন বলেন, এখনও আমার কানে সমস্যা রয়েছে। অনেক চিকিৎসার পরেও কান স্বাভাবিক হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ২য় বর্ষের কারও ব্যক্তিগত কাজের দায়ভার সংগঠন নেবে না। তবে প্রশাসন যদি বিচার করে আমরা তা মেনে নেব।
প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আমরা অতিদ্রুত অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।