বিড়াল হত্যা করে এর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আলাদা করে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে গ্রেফতার হয়েছেন এক তরুণী।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ওই তরুণীকে রাজধানীর গোপীবাগে তার বাসা থেকে গ্রেফতার করে মুগদা থানা পুলিশ। প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা আইনের ৭ ধারায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মুগদা থানা পুলিশ।
ঐ তরুণীর বিরুদ্ধে 'কেয়ার ফর পস' নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসাইনে করা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার জানা গেছে, ১৭ মার্চ রাতে একটি বিড়ালছানা হত্যা করে ওই তরুণী। ১৯ মার্চ নিজের ফেইসবুক আইডিতে হত্যার ভিডিও ও মৃত বিড়ালের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বেশ কিছু ছবি আপলোড করেন তিনি।
পোস্টের পর এসব ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে। তবে তরুণীর এমন কাণ্ডকে বিভৎস, পৈশাচিক বলে মন্তব্য করছেন নেট জনতা। একজন নারী হয়ে কীভাবে এই কাজটি করতে পারে সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলে তাকে মানসিক রোগের চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে বলেছেন।
এরপরই বিষয়টি প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'কেয়ার ফর পস' এর নজরে আসে।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুরে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সংগঠনটির কর্মীরা তরুণীর বাড়িতে যান। এরপর তরুণীকে পুলিশে হেফাজতে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে মুগদা থানার ডিউটি অফিসার এসআই সুশীল জানান, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নিয়ে ওই তরুণীর বাসায় আমাদের টিম গিয়েছিল। এরপর তরুণীকে পুলিশে হেফাজতে নেয়া হয়।
সংগঠনের পক্ষ থেকে মো. সেলিম নামে একজন জানান, ফেসবুকে ভিডিওটি দেখে আমরা গত কয়েকদিন চেষ্টা করে তরুণীকে চিহ্নিত করেছি। মেয়েটি বিড়াল হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তবে তার মা ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন। যেকারণে আমরা স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে তাদের বাসায় গিয়েছি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী জানায়, তিনি ন্যাশনাল আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালে এসএসসি পাস করেছেন তবে অসুস্থতার কারণে পড়াশোনা আপাতত বন্ধ রয়েছে।
এমন বিভৎস কাজ কেন করলেন প্রশ্নে তিনি বলেন, কৌতুহল বশত কাজটি করেছি। এটা আমার বৈজ্ঞানিক গবেষণার একটি অংশ। আর বিড়ালটি আগে থেকেই মৃতপ্রায় ছিল বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, এর আগেও আমি এমন ছোট ছোট বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেছি।
তবে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় এটা শেয়ার করা ঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে এরকম আর করবো না।
এ বিষয়ে তরুণীর মা শাহনাজ বেগম ওই সেচ্চাসেবী সংগঠনকে জানান, একটা বিড়ালের বাচ্চার জন্য ঘরে পুলিশ এসেছে। অথচ রাস্তায় মানুষের বাচ্চা ফেলে গেলেও তো কিছু করেন না।