নড়াইল সদর উপজেলার বাজার সিঙ্গিয়া গ্রামে কোচিং শিক্ষক কতৃক গুরুতর জখম হয়ে (জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান) পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন।
আহতরা হচ্ছে সিংগা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর রাবেয়া(১১), কোমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ৪র্থ শ্রেণির হেনা(৮) ও রাবেয়ার দাদী জাহানারা বেগম (৫০)।
১৫মার্চ সন্ধ্যায় নড়াইল সদর উপজেলার সিঙ্গিয়া গ্রামের ফুল এন্ড ফাইনাল কোচিং এর শিক্ষক রকিবুল ইসলাম মিঠু রতন বিশ্বাসের বাসায় উপস্থিত হয় এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই ৬ষ্ঠ শ্রেণীর রাবেয়াকে(১১) ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করতে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে রাবেয়ার সাথে খেলতে থাকা ৪র্থ শ্রেণির হেনা ও দাদী জাহানারা বেগম। এসময় তাদের কেউ হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আহত করে রকিবুল ইসলাম মিঠু।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন জাহানারা বেগম (৫০) ঘটনার বিয়য়ে জানান, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় পড়ার ঘরে রাবেয়া ও পাশের বাড়ির হেনা খেলছিল। এমন সময় রাবেয়ার কোচিং শিক্ষক মিঠু বাসায় অতর্কিত ভাবে চাপাতি (অস্ত্র) নিয়ে রাবেয়ার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং রাবেয়ার গলায় চাপাতি চালানোর চেষ্টা করে। এসময় প্রথমে হেনা বাঁধা দিতে গেলে তার গলায় ও বাম হাতে আঘাত করে। ‘‘পরে আবার বেটার বেটিকে (নাতনী) জবাই করতে গেলে আমি বাঁধা দিতে গেলে আমার দুই হাতের উপরে চাপাতি ফেলে পালিয়ে যায় শিক্ষক।’’
ঘাতক রকিবুল ইসলাম মিঠু বাজার শিঙ্গিয়া গ্রামের সাইদ বিশ্বাসের ছেলে। সে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
কেন এই হামলা চালানো হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে আহত শিক্ষার্থী বাবা রতন বিশ্বাস জানান, ‘আমার মেয়ে যে কোচিং এ পড়তে যেত সেখানে মিঠু শিক্ষক। সে কিছুদিন আগে আমার সন্তানকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে আমার মেয়ে বাসাতে এসে আমাদের জানায়। আর একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ার কারণে তাৎক্ষণিক আমাদের পরিবার থেকে মিঠুদের বাসায় অভিযোগ করা হয় এবং বলা হয় ভবিষ্যতে এমন কিছু করলে আমরা থানায় জানাবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘এরপর থেকেই আমার মেয়ে কোচিং যাওয়া বন্ধ করে দেয়। আর পরে আবারো সাইদ বিশ্বাসের ছেলে মিঠু আমাদের বাসাতে এসে রাবেয়াকে পড়াতে চায়। তখন আমরা সমাজের মুরব্বীদের বিষয়টি জানানোর কিছুদিনের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে।’
কথা বলার জন্য সাইদ বিশ্বাব ও রকিবুল ইসলাম মিঠুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে নড়াইল থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন পিপিএম বলেন, এ ঘটনায় মিঠুসহ চারজনের নামে মামলা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে উজ্জ্বল নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।