বাংলাদেশের ৮৭ হাজার ৩ শত ১৯ টি গ্রাম থেকে প্রতিদিন কেউ না কেউ পারি জমাচ্ছে এই ইট পাথরের অট্টালিকায় ঘেরা স্বপ্নের শহর রাজধানী ঢাকায়ত। তাদের একজন নীরব(১২)। জীবনের নিষ্ঠুর তম বাস্তবতা তাঁর শিক্ষার অধিকার কেঁড়ে নিলেও এই শহর তাঁকে স্বপ্ন দেখায় একদিন সে বড় গাড়ির মিস্ত্রি হবে।
বাবা ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হলে শিশু নীরব ২০১৭ সালের স্বপরিবারে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় চলে আসেন। বাবা-মা, তিন ভাই বোনসহ নীরবের ঠিকানা হয় রাজধানীর আদাবর থানাধীন মনসুরা বাদের একটি বস্তিতে। ঢাকায় এসে স্কুলের বই পত্র হাতে উঠেনি তাঁর। উঠেছে গাড়ির গ্যারেজে ঝুকিপূণ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।
শিশু নীরবের সাথে কথা হলে সে জানায়, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ঢাকার আসার আগ পর্যন্ত কুষ্টিয়া নিয়মিত লেখা পড়া করেছে সে। এমনকি ক্লাস ক্যাপ্টেনও ছিল সে। স্বপ্ন ছিল পিএসসি পরিক্ষা দিয়ে ভর্তি হবে ‘কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে’। কিন্তু ২০১৭ সালে মাঝামাঝি সময় তাঁর বাবার গরু ব্যবসা লোকসান সম্মুখীন হলে পালটে যেতে শুরু করে তাঁর চার পাশের দৃশ্যপট। স্বপরিবারে চলে আসে ঢাকায়। বাবা বলেছিলেন ঢাকার এসে আবার ভর্তি করিয়ে দিবে। কিন্তু আর ভর্তি হওয়া হয়নি তাঁর।
কেনও আর ভর্তি হয়ও হয়নি? এমন প্রশ্নের উত্তরে ছোট্ট নীরবের মূহর্তে বড় হয়ে উঠে। বলে, ‘ভাই আমি পরিবারের বড় ছেলে আমার একটা দায়িত্ব আছে। বাবার একার আয়ে সংসার চলে না। তাই আমি কাজে লেগে গিয়েছি। মা মানুষের বাসায় কাজ করুক আমি চায় না’।
এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে একটু থেমে আবার বলতে শুরু করে সে, ‘আমার ছোট বোন ভাই আছে। তাঁর এখন স্কুলে যায়। আমি তাঁদের স্কুলে দিয়ে আসি। তাঁদের কখনো স্কুল বন্ধ হবে না। আমি তাঁদের ইঞ্জিনিয়ার বানাবো।
তোমার কি স্বপ্ন? এই প্রশ্নের করার সাথে সাথে নিরবতা ভেঙ্গে বেড়িয়ে আসে সে। বলে, আমি একদিন বড় গাড়ি মিস্ত্রি হয়ে কুষ্টিয়া শহরে একটা গ্যারেজ দিব। আর আমাদের কোনো কষ্ট থাকবে না।
আজ নীরবের মত এমন লক্ষ শিশু নিজের শৈশবের আন্দদ বিক্রি করে জীবণ ধারণ করছে এই স্বপ্নের শহরে। ২০১৮ সালের ০১ মে পর্যন্ত করা জাতীয় শিশুশ্রম জরিপে উঠেছে প্রায় ১৭ লাখ শিশু দেশে শ্রমের সঙ্গে জড়িত, যার ১২ লাখই ঝুঁকিপূর্ণ।