Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১২ রবিবার, মে ২০২৪ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কপোতাক্ষ নদ এখন আবর্জনার ভাগাড়, অপসারণের দাবি এলাকাবাসীর

এসএম বাচ্চু, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি 
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০১৯, ০৩:১১ PM
আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯, ০৩:১১ PM

bdmorning Image Preview


মহাকবি মাইকেল মধুসুদন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদে এক সময় প্রবাহিত হতো স্বচ্ছ পানি। প্রাণ জুড়িয়ে যেত নদের নির্মল বাতাসে। এ নদ দেখলে এখন আর কেউ এ কথা বিশ্বাস করবেন না। সেই কপোতাক্ষ নদ এখন শেওলাসহ ময়লা আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়ে সৌন্দর্য হারাচ্ছে।

সরজমিনে দেখা যায়, বছর দশেক আগেও কপোতাক্ষ নদ দিয়ে প্রবাহিত হতো স্বচ্ছ পানি। ২৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে এ নদ খনন করার ফলে অববাহিকা এলাকায় এখন আর বন্যা দেখা না গেলেও জোয়ার ভাটায় এ নদ বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে প্রতিদিন বর্জ্য এ নদে ফেলা হচ্ছে। তার সাথে নদীতে জমতে শুরু করেছে শেওলা। যা অল্প জোয়ারের সময় আসলেও ভাটার সময় ফিরে যেতে পারছে না নদে বুকে থাকা বাশের সাকোগুলো সহ বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার কারণে।

এদিকে কপোতাক্ষ নদ তার সৌন্দর্য হারিয়ে এখন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। নদের তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত লোকেরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এ শেওলার কারণে। এ নদকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার পরিবার মাছ ধরে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। কালের আবর্তে তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য বিকল্প পথ বেছে নিয়েছেন বাধ্য হয়ে। এ অবস্থায় নদের শেওলা অপসারণ এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ কপোতাক্ষ নদের মাত্র ৯০ কিলোমিটার সচল রাখার জন্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। এরপরও তালা উপজেলার অচিমতলা হতে কপিলমুনি পর্যন্ত নদ শেওলায় পরিপূর্ণ হওয়ায় ভরাটের আরও একটি কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। নদের এ শেওলা অপসারণ করে জোয়ার ভাটা সৃষ্টি করতে না পারলে নদ খনন করে এর সুফল পাওয়া যাবে না।

তালার আতাউর রহমান জানান, শেওলা জমে থাকায় নদের সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা নদের এ অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। শেওলার কারণে নদের বিদায় ঘাট এলাকায় নৌকা ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নদী না বাঁচলে মানুষ বাঁচবে না। বর্তমানে শুধু কপোতাক্ষই নয় দেশের প্রায় সকল নদ-নদীগুলোর অবস্থা খুবই করুণ। যেভাবে নদী দখল ও নদে শেওলা জমছে, এক সময় এর অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যাবে না।

সম্প্রতি তালা-কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড মুস্তফা লুৎফুল্লাহ সংসদ অধিবেশনে তালা কপোতাক্ষ নদের কথা উল্লেখ করে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২৬২ কোটি টাকার বিনিময় নদটি পূর্ণ খনন করা হয়। যার ফল ১৮ বছর পরে তালার মানুষ পাচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডর একঘেয়েমি ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে সেই কপোতাক্ষ নদে আবারও পলি ও শেওলা জমতে শুরু করেছে। যা জনজীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে অতিদ্রুত ববস্থা নেওয়া না হলে ১৮ বছর পরের হাসি ম্লান হতে পারে। 

Bootstrap Image Preview