বহুল আলোচিত সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের স্কুল ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষার্থী হুমায়রা আক্তার মুন্নী (১৯) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘাতক ইয়াহিয়া সরদারকে মৃত্যুদণ্ডের (ফাঁসি) রায় দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালতের বিচারক।
বুধবার (১৩ মার্চ) বেলা ১১টায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার ওই রায় প্রদান করেন। নিহত মুন্নী উপজেলার নগদীপুরের ইতালী প্রবাসী হিফজুর রহমানের মেয়ে ও দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত ইয়াহিয়া সরদার জেলার দিরাই উপজেলার সাকিতপুর গ্রামের জামাল সরদারের ছেলে।
আদালত রায় ঘোষণাকালে আসামী ইয়াহিয়া সরদারকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিরাই পৌর শহরের আনোয়ারপুরের বাসায় ঢুকে পড়ার টেবিলে থাকা ইতালী প্রবাসীর কন্যা মেধাবী স্কুল ছাত্রী দিরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী হুমায়রা আক্তার মুন্নীকে উপর্যুপরী ছুরিকাঘাতে খুন করে ঘাতক ইয়াহিয়া সরদার।
এ ঘটনার দু'দিন পর ২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর নিহতের মা বাদী হয়ে দিরাই থানায় ঘাতক ইয়াহিয়া সরদার ও তার অপর এক সহযোগীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি সারাদেশে আলোচিত ও বিচারের দাবিতে প্রতিবাদী জনতা সোচ্চার হয়ে সমাবেশ ও মানববন্ধন শুরু করলে পুলিশ প্রথমে ইয়াহিয়ার সহযোগী দিরাই পৌর শহরের আনোয়ারপুর নয়াহাটির বাসিন্দা আবুল কালাম চৌধুরীর ছেলে তানভীর আহমদ চৌধুরীকে গ্রেফতার করে।
এরপর হত্যাকাণ্ডের ৫ দিন পরে সিলেটের জালালাবাদ থানার মাসুকপুর গ্রামসংলগ্ন দশশাল থেকে প্রধান আসামী ও ঘাতক ইয়াহিয়া সরদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ওই সময়ের সারাদেশে আলোচিত হত্যাকাণ্ড হিসাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী, তৎকালীন আইজিপিসহ সরকারের দায়িত্বশীলদের তদারকীতে মাত্র ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর ঘাতক ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলার অভিযোগ পত্র আদালতে দাখিল করে থানা পুলিশ।
আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুমায়ন মঞ্জুর চৌধুরী।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালননাকারী (পিপি) ড. খায়রুল কবীর রোমেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. ওয়াহিদুজাম্মান শিকদার ঘাতকের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড রায় প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।