দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলায় (হিলির) প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। যেখানে বিদ্যুতের আলো পাওয়াটা ছিল কষ্টের। সেখানেও সোলারের আলোয় আলোকিত হচ্ছে গ্রামীণ জনপদ। ছোট বড় বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে জ্বলছে সৌর বিদ্যুতের বাতি।
হরিহরপুর বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, আগে আমার দোকানে শুধু বিদ্যুৎ ছিল। বিদ্যুৎ চলে গেলে দোকানের সামনে লোকজন থাকতো না, এখন তার উল্টো চিত্র বিদ্যুৎ চলে গেলে বুঝতেই পারি না। এখন সব সময় আমার দোকানের সামনে মানুষের ভিড় থাকে আগের চেয়ে কেনা-বেচাও ভালো হয়।
কাদিপুর গ্রামের আনিসুর রহমান বলেন, আগে রাস্তা ঘাট গুলো অন্ধকার ছিলো। এখন তা আর নেই, রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করলে মনে হয় যেন দিনের বেলা ঘুরে বেড়াচ্ছি। রাতের বেলা ঘুরে বেড়াতে খুব ভালো লাগে।
সাধুরিয়া গ্রামের রমেশ চন্দ্র বিডিমর্নিংকে বলেন, আগে তো রাস্তা ঘাটে চলতে চোর-ডাকাতের ভয় করতো, এখন তা আর লাগে না। কারণ সরকার সোলার বাতি দিছে আলো জ্বলে, আমরা রাত কি দিন কি সমানে ঘুরে বেড়ায়।
আলীহাট ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি গোলাম মওলা বিডিমর্নিংকে বলেন, চলতি বছর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে হরিহরপুর বাজার, মনসাপুর বাজার, সাধুরিয়া বাজার, জাংগই বাজার, বাওনা বাজার, সহ ইউনিয়নের প্রতিটি জায়গায় বর্তমান সরকারের উদ্যোগে স্ট্রিট লাইট বসানো হয়েছে। এতে পাল্টে গেছে বাজার গুলোর চিত্র, গভীর রাত পযর্ন্ত বাজার গুলোতে এখন মানুষের সমাগম চোখে পড়ার মত। বিদ্যুৎ গেলেও কোন সমস্যা হয় না। বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার।
আলীহাট ইউনিয়ন চেয়ারম্যান গোলাম রসূল বাবু বিডিমর্নিংকে জানান, আমার এলাকায় রাস্তার পাশে ও গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে সৌর প্যানেলের মাধ্যমে আলো পৌঁছানো হচ্ছে। এছাড়াও মাদ্রাসা ও মসজিদগুলোতে একটি করে সোলার প্যানেল দেওয়া হয়েছে যাতে করে বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে। ফলে এখন রাতের আঁধারে মানুষ নিরাপদে চলাচল করছে। রাস্তাগুলো আলোকিত হওয়ায় অপরাধ কমে এসেছে। রাত নামলেই আলোয় আলোকিত হচ্ছে গ্রামীণ জনপদ।
খট্রামাধবপাড়া ইউনিয়ন গোলাম মোস্তফা জানান, চলতি বছর ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ডাঙ্গাপাড়া বাজারে স্ট্রিট লাইট বসানো হয়েছে। এতে পাল্টে গেছে বাজারের চিত্র। বিদ্যুৎ গেলেও কোন সমস্যা হয় না।
হাকিমপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহেল রানা বিডিমর্নিংকে জানান, ত্রাণ পুনর্বাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় সৌর বিদ্যুতে জ্বলবে সড়ক বাতি।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সারাদেশে গ্রামেগঞ্জে সৌর বিদ্যুতের প্রকল্প নেয়া হয়। ২০১৬ সাল থেকে এ উপজেলার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সোলার স্থাপন ও মেঠোপথে স্ট্রিট লাইট বসানোর কাজ শুরু হয়। গত অর্থ বছর পর্যন্ত ২ কোটি ৪৩ হাজার ৮শ' ২৭ টাকা ব্যয়ে এ উপজেলায় ২শ' ৬৯ টি সোলার ও স্ট্রিট লাইট বসানো হয়েছে। সৌর বিদ্যুতের কারণে একদিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হচ্ছে, অন্যদিকে গ্রামের মানুষ অন্ধকার থেকে আলোয় চলাচল করতে পারছে।