কিভাবে নারায়ণগঞ্জের মেয়র হলেন ডা. সেলিনা হায়াত আইভী? দেড়যুগ পর এই প্রশ্নের উত্তর জানালেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আকরাম।
শনিবার (৯ মার্চ) বিকেলে নাগরিক ঐক্যের জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠনকালে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই প্রশ্নের উত্তর জানান।
এসএম আকরাম বলেন, আজকে যারা আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতা হিসেবে দাবি করেন তখন তারা সবাই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তখন আমাকে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তখন খুব দাপটের সঙ্গে দেশ চালাচ্ছে বিএনপি। আমরা ছিলাম বিরোধী দল। কোণঠাসা অবস্থার মধ্যে আমাকে তখন দলটির দায়িত্ব নিতে হয়েছিল।
‘ওই সময় নারায়ণগঞ্জ পৌর নির্বাচনে আইভীকে আমরা প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিলাম। আমরা জানতাম, নির্বাচনটা যদি সুষ্ঠু হয় তাহলে আইভীকে নিয়ে সফল হতে পারব। কিন্তু নির্বাচন যে সুষ্ঠু হবে সে গ্যারান্টি কে দিবে? নির্বাচন সুষ্ঠু হতে হলে সরকারের সদিচ্ছার দরকার। সরকার যদি চায় তাহলেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে’।
‘ওই নির্বাচনে আইভীর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির প্রার্থী নূরুল ইসলাম সরদার। আমি কৌশল করলাম, নূরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললাম। মুরুব্বি হিসেবে সে আমাকে সম্মান দিতো। আমি তাকে বললাম, ‘নূরুল ইসলাম তুমি বিএনপির প্রার্থী হয়েছো আমিও আমাদের একজন প্রার্থী দিয়েছি। চলো আমরা একটা ফেয়ার নির্বাচন করি। কারচুপির মাধ্যমে যদি তুমি চেয়ারম্যান হয়েই যাও তাহলে পাঁচটি বছর তুমি বিবেকের দংশনে জ্বলবে। তুমি আমাকে কথা দাও কোনো রকম কারচুপি করবে না আমিও করব না।’
'নূরুল ইসলাম আমাকে আশ্বস্ত করেছিল কারচুপি করবে না। কিন্তু আমার মনে হলো নূরুল ইসলাম না হয় কারচুপি করবে না। কিন্তু সরকার যদি কারচুপি করে তাহলে সেখানে কী উপায়? তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন বিএনপির মতিন চৌধুরী। আমাদের নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের। তিনি ছিলেন আমার পূর্বপরিচিত। আমি চিন্তা করলাম তার সঙ্গে কথা বলব, গেলাম তার কাছে। তাকে বুঝালাম একটা ফেয়ার নির্বাচনের জন্য। তিনি আমার কথা বুঝলেন। তিনি কথা দিলেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, কোনো কারচুপি হবে না। তিনি তার কথা রেখেছিলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আইভী তখন চেয়ারম্যান নির্বাচন হলেন'। যোগ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।