Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৭ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কিছু হওয়ার আগেই সমাধান করে দিল ‘নীল প্রজাপতি’

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০ মার্চ ২০১৯, ১২:০০ PM
আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৯, ১২:০০ PM

bdmorning Image Preview


‘মানুষের জীবনে তার সবচেয়ে কাছের মানুষ হলো মা। আর মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে অন্যায় কাজ করলে তো ফল ভোগ করতেই হবে। হয়তো সেগুলোই ভোগ করছি। আজ যা হয়েছে তার জন্য নিজেকে কোনো দিন ক্ষমা করতে পারব না। কোনো কিছু হওয়ার আগেই সমাধান করে দিয়ে যাব। সব সমাধান হবে। সরি! মা। আই লাভ ইউ মা।’

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাত ৯টা ৫২ মিনিটে ‘নীল প্রজাপতি’ নামে নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ওয়ালে ‘ফিলিং সেড’ উল্লেখ করে মর্মস্পর্শী স্ট্যাটাসটি লিখেছিলেন বঙ্গবন্ধু কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ফাতেমা। এর পর শুক্রবার সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে প্রিয় বান্ধবী রোকেয়া সুলতানার সঙ্গে ফেসবুকের চ্যাট বক্সে শেষ কথা হয় ফাতেমার।

এ সময় তাকে উদ্দেশ্য করে রোকেয়া লেখেন ‘নামাজ পড়তে আয়, নামাজ পড়লে মন ভালো হয়, কষ্ট দূর হয়। প্রতিউত্তরে ফাতেমা বলেন কষ্ট না রে... কাল না আমার ওই কাজগুলো করা ঠিক হয়নি... ভালো তো বাসি রবিউলরে... তা হলে ওর সাথে এই আকাম কেমনে করলাম...? এখন নিজের কাছে নিজেকে দোষী মনে হচ্ছে।’

পরে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর পল্লবী ১১ নম্বর সেকশনের বাউনিয়া বাঁধ ‘ই’ ব্লকের ১১/২৩ নম্বর মামার বাসা থেকে ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন তার স্বজনরা। গতকাল শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য তা সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ফাতেমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী সুলতানা রোকেয়া গতকাল বিকালে আমাদের সময়কে বলেন, ‘এবার মেয়র নির্বাচনে মিরপুর এলাকায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করার সময় আক্তার নামে এক যুবকের সঙ্গে ফাতেমার পরিচয় হয়, পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমার বাসায় এসে ফাতেমা মোবাইল ফোনে আমাকে আক্তারকে ধরিয়ে দেয়। তখন আক্তার বলেছিল ওর (ফাতেমা) মাথা খারাপ, খালি বিয়ের কথা বলে। যোগাযোগ রাখা যেতে পারে, কিন্তু ফাতেমাকে বিয়ে করতে পারব না। এর পর বিমর্ষ মনে বাসায় ফিরে গিয়ে ফেসবুকে তার মাকে উদ্দেশ্য করে শেষ স্ট্যাটাস দেয় ফাতেমা।’

পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওয়াদুদ জানান, ফাতেমার যথন তিন মাস বয়স, তখন বাবা হাবিবুর রহমান তাদের ছেড়ে যান। জীবিকার তাগিদে প্রায় ছয় বছর আগে ফাতেমার মা মমতাজ বেগম চলে যান বিদেশে (কুয়েত)। মা-বাবা না থাকায় বড়ভাই মামুন হোসেনের সঙ্গে বাউনিয়া বাঁধ ‘ই’ ব্লকে মামার বাসায় থাকতেন ফাতেমা।

শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে তাকে বাসায় রেখে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান পরিবারের অন্যরা। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ঘরে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে মামুন টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখেন লোহার অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন ফাতেমা। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে কলেজছাত্রী ফাতেমা আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই তা জানা যাবে। তবে এ ধরনের ঘটনায় প্ররোচনার বিষয় থাকতে পারে। তদন্তে এ মৃত্যুর পেছনে কেউ দায়ী হলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

Bootstrap Image Preview